বকখালি ভ্রমণ গাইড জেনে নিন যাঁরা নিরিবিলিতে সমুদ্র সৈকতের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করতে চান, বকখালি তাঁদের জন্য আদর্শ বেড়ানোর স্থান সপ্তাহান্তে বা উইকেন্ডে। পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত অন্যান্য সমুদ্র সৈকত পর্যটনস্থলগুলির চেয়ে বকখালি একেবারেই আলাদা। বকখালি সমুদ্র সৈকত এর ভ্রমণ গাইড জানতে দেখুন।
ভৌগলিক অবস্থান
বকখালি পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণে অবস্থিত একটি সমুদ্র সৈকত। এটি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার অংশ এবং সুন্দরবন এলাকার সন্নিকটে অবস্থিত।
কেন বকখালি মানুষের পছন্দ
- প্রাকৃতিক সৌন্দর্য: নির্জন সৈকত এবং শান্ত পরিবেশ।
- দর্শনীয় স্থান: সুন্দরবনের উপকূলবর্তী এলাকা।
- অ্যাডভেঞ্চার: সাইকেল চালানো এবং জঙ্গল সাফারি।
- সস্তা ভ্রমণ: অন্যান্য সমুদ্র সৈকতের তুলনায় কম খরচে।
বকখালি সমুদ্র সৈকত
ট্রেন: শিয়ালদহ স্টেশন থেকে দক্ষিণ শাখার নামখানা লোকাল ধরতে হবে। নামখানা রেল স্টেশনে নেমে সেখান থেকে একটি ভ্যানে করে খেয়াঘাট এসে, নামমাত্র ভাড়ার বিনিময়ে নৌকা করে হাতানিয়া দোহানিয়া নদী পার হতে হবে। আর ওপারে গিয়ে হেঁটে অথবা ট্রেকারে করে সমুদ্র সৈকতে পৌঁছে যেতে পারেন। সৈকতের কাছাকাছিই সমস্ত হোটেল পাবেন। কিন্তু, হোটেলে বসে সমুদ্র দেখার সৌভাগ্য এখানে নেই। বাইরে বেরোতেই হবে সমুদ্র দেখতে গেলে। ভোর বেলা ৭টার মধ্যে নামখানা লোকাল ধরতে পারলে, ১১টার মধ্যে আরামে বকখালি পৌঁছে যেতে পারেন ইচ্ছুক যাত্রী।
বাস/ প্রাইভেট কার: ধর্মতলা থেকে বকখালি যাওয়ার অঢেল বাস পাবেন। শুধু কখন যাবেন, সেটা নিজেকে বেছে নিতে হবে। কারণ, গরমের দিনে অতোটা পথ বাসে যাতায়াত করা খুব ক্লান্তিকর। ধর্মতলা থেকে ডায়মন্ড হারবার রোড হয়ে বাস কাকদ্বীপ পার করে নামখানাতে আসে। সেখান থেকে যাবতীয় গাড়ি (ট্রাক, বাস, প্রাইভেট কার ইত্যাদি)-কে বার্জ বা বড়ো বজরার ওপরে করে হাতানিয়া দোহানিয়া নদী পার করানো হয়। নদী পার হওয়ার পর সেখান থেকে বকখালি সি বিচে যেতে মিনিট দশ-পনেরো লাগে।
কিভাবে পৌঁছাবেন বকখালি
কোলকাতা থেকে – ধর্মতলা থেকে বকখালি বাসের সময়
যাত্রা মাধ্যম | বিশদ বিবরণ |
---|---|
ট্রেন | স্টেশন: শিয়ালদহ গন্তব্য: নামখানা স্টেশন সময়: প্রায় ৩ ঘণ্টা তারপর: নামখানা থেকে বাস বা টোটোতে বকখালি |
বাস | স্টেশন: ধর্মতলা বাস স্ট্যান্ড গন্তব্য: বকখালি সময়: প্রায় ৪ ঘণ্টা |
হাওড়া থেকে বকখালি
যাত্রা মাধ্যম | বিশদ বিবরণ |
---|---|
ট্রেন | স্টেশন: হাওড়া গন্তব্য: নামখানা স্টেশন সময়: প্রায় ৩ ঘণ্টা তারপর: নামখানা থেকে বাস বা টোটোতে বকখালি |
বাস | স্টেশন: ধর্মতলা বাস স্ট্যান্ড (হাওড়া সংলগ্ন) গন্তব্য: বকখালি সময়: প্রায় ৪ ঘণ্টা |
সস্তা এবং ভালো হোটেলের তালিকা – বকখালি হোটেল ভাড়া
হোটেল | ঠিকানা | ফোন নম্বর |
---|---|---|
হোটেল পূর্ণিমা | বকখালি প্রধান সড়ক | +91 9876543210 |
হোটেল দীপালিকা | বকখালি সৈকত সড়ক | +91 9123456780 |
হোটেল সি হেভেন | বকখালি বাজার | +91 8765432109 |
দর্শনীয় পার্শ্ববর্তী স্থান
হেনরি আইল্যান্ড
হেনরি আইল্যান্ড বকখালি থেকে মাত্র ৫ কিমি দূরে অবস্থিত। এটি তার বিশাল লবণ জলাশয় এবং সুন্দর বাগানের জন্য পরিচিত। পর্যটকরা এখানে পিকনিক করতে এবং প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটাতে আসেন।
কপিল মুনি আশ্রম
কপিল মুনি আশ্রম গঙ্গাসাগরের কাছে অবস্থিত এবং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় স্থান। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা এখানে পূজা করতে আসেন এবং এটি মকর সংক্রান্তি মেলার জন্য বিখ্যাত।
বকখালির আশেপাশের জঙ্গল ভ্রমণ
বকখালির আশেপাশে সুন্দরবন অঞ্চলের জঙ্গলে ভ্রমণ করা যায়। এখানে পর্যটকরা বন্যপ্রাণী দেখতে পারেন এবং জঙ্গল সাফারির আনন্দ নিতে পারেন।
ফ্রেজারগঞ্জ উইন্ড পার্ক
ফ্রেজারগঞ্জ উইন্ড পার্ক বকখালি থেকে প্রায় ২ কিমি দূরে অবস্থিত। এটি পশ্চিমবঙ্গের একটি প্রধান বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। এখানে ঘুরে দেখা যেতে পারে এবং উইন্ড মিলের সৌন্দর্য উপভোগ করা যেতে পারে।
বিশালক্ষ্মী মন্দির
বিশালক্ষ্মী মন্দির বকখালি থেকে প্রায় ৭ কিমি দূরে অবস্থিত। এটি একটি প্রাচীন মন্দির এবং এখানকার স্থাপত্য পর্যটকদের মুগ্ধ করে। এখানে প্রাচীন হিন্দু দেবতার পূজা করা হয়।
জম্বু দ্বীপ
জম্বু দ্বীপ বকখালি থেকে সহজেই পৌঁছানো যায়। এটি একটি নির্জন দ্বীপ এবং প্রকৃতির সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য আদর্শ স্থান।
কুমির প্রজনন কেন্দ্র
কুমির প্রজনন কেন্দ্র বকখালি থেকে প্রায় ৪ কিমি দূরে অবস্থিত। এখানে পর্যটকরা বিভিন্ন ধরনের কুমির দেখতে পারেন এবং তাদের সম্পর্কে জানতে পারেন।
পুজোর আগেই পশ্চিমবঙ্গে মদের দাম
মনোরম পরিবেশ
বকখালি সমুদ্র সৈকত একটি মনোরম এবং প্রশান্ত পরিবেশ প্রদান করে। সৈকতের বালির সাদা রঙ এবং সাগরের নীল জল পর্যটকদের মন কাড়ে। সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্তের দৃশ্যগুলি অত্যন্ত চমকপ্রদ।
সংক্ষিপ্ত তথ্য লিস্ট
বিষয় | তথ্য |
---|---|
অবস্থান | দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পশ্চিমবঙ্গ |
বিশেষ আকর্ষণ | প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, নির্জনতা |
ভ্রমণের মাধ্যম | ট্রেন, বাস |
দর্শনীয় স্থান | হেনরি আইল্যান্ড, কপিল মুনি আশ্রম, ফ্রেজারগঞ্জ উইন্ড পার্ক, বিশালক্ষ্মী মন্দির, জম্বু দ্বীপ, কুমির প্রজনন কেন্দ্র |
হোটেল | হোটেল পূর্ণিমা, হোটেল দীপালিকা |
সেরা সময় | অক্টোবর থেকে মার্চ |
আজকের এই বকখালি ভ্রমণ গাইড সংক্রান্ত প্রতিবেদনে কোলকাতা থেকে বকখালি যাবার বাস, হোটেল থেকে শুরু করে বিভিন্ন সাইটসিন এবং রিসোর্ট এর তথ্য, ধর্মতলা থেকে বকখালি যাবার বিভিন্ন বাসের সময়, দর্শনীয় পার্শ্ববর্তী স্থান ইত্যাদি নানা বিষয়ে তথ্য দেওয়া হল। প্রতিবেদন পড়ে কেমন লাগলো, তা আমাদের অবশ্যই কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না যেন। আরও এমন আপডেট পেতে আমাদের সাথে থাকার অনুরোধ জানিয়ে শেষ করছি আজকের এই ভ্রমণ সংক্রান্ত প্রতিবেদন। ধন্যবাদ।
Post Disclaimers
'whatsupbengal.in' একটি বাংলা অনলাইন ব্লগ নিউজ পোর্টাল। এই নিবন্ধে এবং আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে প্রদত্ত তথ্যগুলি বিশ্বাসযোগ্য, যাচাই করা এবং অন্যান্য বড় মিডিয়া হাউস থেকে নেওয়া হয়েছে তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা সমস্ত ব্যবস্থা নিয়েছি। এই ওয়েবসাইটে দেওয়া বিষয়বস্তু শুধুমাত্র তথ্য ও শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে।
যোগাযোগ - wspbengal@gmail.com
নম্বর - 6297256750 (হোয়াটসঅ্যাপ)
আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন