শিক্ষক দিবস হিসেবে পালিত হয় প্রতি বছরের এই 5 সেপ্টেম্বর এর দিনটি। বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণান এর সংক্ষিপ্ত জীবনী জানতে দেখুন আজকের এই বিশেষ প্রতিবেদন। সারা দেশ জুড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পালিত হয় Teachers Day. সেই মতো পশ্চিমবঙ্গের স্কুল, কলেজ থেকে শুরু করে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পালিত হয় এই দিনটি।
শিক্ষক দিবস ভারতে প্রতি বছর ৫ সেপ্টেম্বর পালন করা হয়, যা ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এবং বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণানের জন্মদিনকে স্মরণ করে। রাধাকৃষ্ণান ছিলেন একজন প্রখ্যাত দার্শনিক, শিক্ষাবিদ এবং লেখক, যিনি শিক্ষার ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রেখেছেন। তাঁর সম্মানে, শিক্ষার্থীরা এই দিনে শিক্ষকদের প্রতি তাদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং সমাজে তাদের অবদানের স্বীকৃতি দেয়। স্কুল ও কলেজে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই দিনটি উদযাপিত হয়।
প্রতি বছর শিক্ষক দিবসে ভারতের রাষ্ট্রপতি মেধাবী শিক্ষকদের জাতীয় শিক্ষক পুরস্কার প্রদান করেন। এই পুরস্কারগুলি প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রশংসা হিসাবে দেওয়া হয়। শিক্ষকদের এই অবদানকে সমাজে সম্মানিত করার জন্য দিনটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
ভারতে প্রথম শিক্ষক দিবস ১৯৬২ সালে পালিত হয়। ডঃ রাধাকৃষ্ণানের ছাত্র এবং বন্ধুরা তার জন্মদিন উদযাপনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি পরামর্শ দিয়েছিলেন যে তার জন্মদিনকে শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করা হোক। সেই থেকে, ৫ সেপ্টেম্বর তারিখে ভারতে শিক্ষক দিবস পালিত হয়ে আসছে, যা শিক্ষকদের প্রতি সম্মান জানানোর একটি দিন হিসেবে গণ্য করা হয়।
শিক্ষক দিবস সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা
সামনেই 5 সেপ্টেম্বর, ভারতে পালিত হবে শিক্ষক দিবস। এই নিয়ে শিক্ষক শিক্ষিকা সহ ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে উত্তেজনা থাকে তুঙ্গে। 1962 সালে ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ ভারতবর্ষের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এই আনন্দে তাঁর বন্ধুরা আর ছাত্রছাত্রীরা তাঁর জন্মদিন সেলিব্রেট করতে চেয়েছিলেন। তিনি এই প্রস্তাবে রাজি হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি জানিয়েছিলেন, যদি তাঁর জন্মদিন ‘শিক্ষক দিবস’ হিসেবে চিহ্নিত হলে তিনি আপ্লুত হবেন। এরপর থেকেই 5 ই সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস হিসেবে উদযাপন করা হয়।
জন্ম
এরপর থেকে ভারতরত্ন ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণের জন্মদিন ভারতবর্ষে প্রতিবছর ‘শিক্ষক দিবস’ হিসেবে পালন হয়ে আসছে। তিনি একজন শিক্ষক হয়েও ভারতের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট আর দ্বিতীয় প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি 1888 সালের 5 ই সেপ্টেম্বর তামিলনাড়ুর তিরুত্তানিতে একটি ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর মাতৃভাষা তেলেগু।
শিক্ষক দিবস পালনের কারণ
তাঁর বাবার নাম ছিল সর্বপল্লী ভিরাস্বামী। আর 1962 সালে ভারতের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হন। সেই বছর তাঁর ছাত্র-ছাত্রী আর বন্ধুরা মিলে তাঁর জন্মদিন বড় করে উদযাপন করতে চেয়েছিলেন। এর উত্তরে তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর জন্মদিন যদি শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করা হয় তাহলে তিনি বেশি খুশি হবেন। এরপর থেকেই 5 ই সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন হয়ে আসছে।
শিক্ষাজীবন
ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ নিজের শিক্ষাজীবনে তিরুপতি আর ভেলোরে বহু স্কলারশিপ পেয়েছেন। তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা 1896 সালে তিরুত্তানির কে ভি হাই স্কুল থেকে শুরু হয়। তিনি মাদ্রাসার ক্রিস্টিয়ান কলেজ থেকে দর্শন নিয়ে পড়াশোনা করেন। 1906 সালে তিনি এই কলেজ থেকেই মাস্টার ডিগ্রি লাভ করেন। মাইসোর এবং কলকাতা ইউনিভার্সিটিতে দর্শনের প্রফেসর হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন তিনি।
এরপর তিনি অন্ধ্র ইউনিভার্সিটিটির ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে নিযুক্ত হন। প্রফেসর হিসেবে ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে 1936 সাল থেকে 1952 সাল পর্যন্ত নিযুক্ত ছিলেন। সেখানে তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের ইস্টার্ন রিলিজিয়ন আর এথিক্স শেখাতেন। ভারতবর্ষের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ 1939 সাল থেকে 1948 সাল পর্যন্ত বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন।
আর এর 5 বছর পর 9 বছরের জন্য অর্থাৎ 1953 সাল থেকে 1962 সাল পর্যন্ত দিল্লি ইউনিভার্সিটির চ্যান্সেলর পদে নিযুক্ত ছিলেন। এছাড়াও 1948-49 সালে তিনি ইউনেস্কোর এক্সিকিউটিভ বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন। তারপর সোভিয়েত ইউনিয়নের ইন্ডিয়ান অ্যাম্বাসাডর হিসেবে 1949 সাল থেকে 1952 সাল পর্যন্ত কাজ করেছেন। তিনি 1952 সালে ভারতে ফিরে আসেন। এরপর 1962 সালের 11 ই মে ভারতবর্ষের ভাইস প্রেসিডেন্ট পদের জন্য নির্বাচনে দাঁড়ান।
লেখা কিছু বিখ্যাত বই
ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ বেশ কিছু বিখ্যাত বই লিখেছেন। যেমন- ইন্ডিয়ান ফিলোসফি (Indian Philosophy), দ্য ফিলোজফি অফ উপনিষদস্ (The Philosophy of Upanishads), এন আইডিয়ালিস্ট ভিউ অফ লাইফ (An idealist view of life), ইস্টার্ন রিলিজিয়নস্ এন্ড ওয়েস্টার্ন থট (Eastern Religios and Western Thought), ইস্ট এন্ড ওয়েস্ট : সাম রিফ্লেকশনস্ (East and West : Some Reflections)।
ড. সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণ নিজের লেকচার এবং বইতে চেষ্টা করতেন ভারতীয় চিন্তাভাবনা প্রদর্শন করার। তিনি একাধারে পন্ডিত, শিক্ষক, রাজনীতিবিদ ও দার্শনিক ছিলেন। তিনি সবসময় দেখানোর চেষ্টা করেছেন হিন্দু ধর্ম দার্শনিকভাবে সঠিক আর নৈতিকভাবে কার্যকর।
জীবনাবসান
মাত্র 16 বছর বয়সে সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণের বিয়ে হয় শিবাকামুর সাথে। তাঁরা দূর সম্পর্কেও কাজিন ছিলেন। তাঁরা 51 বছর একসাথে সংসার করেন। তাঁদের একত্রে 6 টি সন্তান হয়েছিল- 5 টিয় মেয়ে ও 1 টি ছেলে। তাঁর স্ত্রী 1956 সালের 26 শে নভেম্বর মারা যান। এরপর তিনি আমৃত্যু আর বিয়ে করেননি। 1967 সালে তিনি মানুষের থেকে দূরত্ব তৈরি করে নিয়ে একাকীত্ব জীবন যাপন করতে থাকেন। জীবনের শেষ 8 বছর তিনি মাদ্রাসের মাইলাপোরে কাটিয়েছিলেন। এরপর 1975 সালের 17 ই এপ্রিল তাঁর দেহাবসান ঘটে।
উপসংহার
শিক্ষক দিবস পালন সম্পর্কে ছিল আজকের এই প্রতিবেদন। শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে আরও নানা আপডেট জানতে দেখতে থাকুন।
রাজ্যে আবার নতুন ছুটি! তবে সবার জন্য নয়,
সরকারি বিজ্ঞপ্তি দেখুন।
আমাদের সাথে যুক্ত থেকে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ আপডেট পেয়ে যান খুব তাড়াতাড়ি! সরকারি চাকরী থেকে শুরু করে নতুন ব্যবসার দারুণ আইডিয়া, রাজ্য ও কেন্দ্রের নানা প্রকল্প, দিনের নানা আপডেট, ব্যাংক, পোস্ট অফিস, LIC এর নতুন প্ল্যান, টেলিকম জগতের নানা অফার হিসেবে জিও-এয়ারটেল-BSNL-VI এর দারুণ রিচার্জ, সরকারি কর্মীদের নানা আপডেট, স্কুল-কলেজ সংক্রান্ত নানা বিষয়, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি স্কলারশিপ, নতুন মোবাইল থেকে শুরু করে নানা ধরণের টেক নিউজ সম্পর্কে পান নতুন আপডেট। সকলে সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।
দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে আরও ৪টি নতুন সুবিধা চালু,
আবেদন করলেই টাকা একাউন্টে! দেখে নিন।
Post Disclaimers
'whatsupbengal.in' একটি বাংলা অনলাইন ব্লগ নিউজ পোর্টাল। এই নিবন্ধে এবং আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে প্রদত্ত তথ্যগুলি বিশ্বাসযোগ্য, যাচাই করা এবং অন্যান্য বড় মিডিয়া হাউস থেকে নেওয়া হয়েছে তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা সমস্ত ব্যবস্থা নিয়েছি। এই ওয়েবসাইটে দেওয়া বিষয়বস্তু শুধুমাত্র তথ্য ও শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে।
যোগাযোগ - wspbengal@gmail.com
নম্বর - 6297256750 (হোয়াটসঅ্যাপ)
আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন