Balika Samriddhi Yojana: 1997 সালে চালু হয়েছে, এটি ভারতের একটি সরকারি কর্মসূচি যা সুবিধাবঞ্চিত পরিবারের মেয়েদের শিক্ষা এবং মঙ্গলকে সমর্থন করে। এটি এই পরিবারগুলিকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে। যদি একটি মেয়ে শিশু 15 আগস্ট, 1997 তারিখে বা তার পরে জন্মগ্রহণ করে, দারিদ্র্য সীমার নীচে (গ্রামীণ বা শহুরে) একটি পরিবারে সর্বাধিক দুটি কন্যা সন্তানের সাথে, এই স্কিমটি প্রাথমিক আমানতের প্রস্তাব করে। প্রতি শিক্ষাবর্ষের জন্য 500 এবং তারপরে বার্ষিক বৃত্তি প্রদান করা হয়, তিনি 12 শ্রেণী পর্যন্ত সফলভাবে সম্পন্ন করেন। এই আর্থিক সহায়তার লক্ষ্য মেয়েদের তালিকাভুক্তি এবং স্কুলে ধরে রাখা, বাল্যবিবাহকে নিরুৎসাহিত করা এবং শিক্ষার মাধ্যমে মেয়েদের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে লিঙ্গ সমতা বৃদ্ধি করা।
বর্তমান যুগে দরিদ্র বা নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারগুলির পক্ষে সংসার চালিয়ে সন্তানদের উচ্চ শিক্ষা শিক্ষিত করা বা ধুমধাম করে বিয়ে দেওয়া যথেষ্ট কষ্টকর। এর ফলস্বরূপ পিছিয়ে পড়ে বহু কন্যা সন্তানরা। আজ সেইসব দরিদ্র পরিবারের কন্যা সন্তানদের জন্য রইলো একটি সুখবর।
পড়াশোনা বিশিষ্ট যাবতীয় দায়ভার সামলাতে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে একটি প্রকল্প চালু করা হলো। “বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও” ও “সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা” যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য। নারীসমাজ বিশিষ্ট কুমন্তব্য রুখতে ও তাদের কল্যাণার্থে এই প্রকল্পের সূত্রপাত। এবার যে প্রকল্পটির কথা বলা হবে, সেটি হল – বালিকা সমৃদ্ধি যোজনা (Balika Samriddhi Yojana 2023)।
বালিকা সমৃদ্ধি যোজনা (Balika Samridhi Yojana 2023) কি?
উল্লেখ্য প্রকল্পটি “বালিকা সমৃদ্ধি যোজনা” (Balika Samriddhi Yojana 2023)। ভারত সরকারের নারী ও শিশু উন্নয়ন পরিষদের প্রচেষ্টায় 1997 সালে এই প্রকল্পের আরম্ভ এবং যার মূলমন্ত্র ছিল দরিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারী নারীদের আর্থিক সহায়তা। প্রকল্প অনুযায়ী প্রথম শ্রেণীতে পাঠরত এবং অনূর্ধ্ব নাবালক মেয়েদের একটি স্কলারশিপ প্রদান করা হবে। এছাড়াও আরেকটি আকর্ষণ রয়েছে। দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাসকারী মায়েদের 500 টাকা অনুমোদন করা হবে কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ার সুবাদে।
এবার Balika Samriddhi Yojana 2024 প্রকল্পটির বিভিন্ন শ্রেণীতে চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক:
শ্রেণীবিশেষ (Balika Samriddhi Yojana) স্কলারশিপ:
1) প্রথম শ্রেনী থেকে শুরু করে তৃতীয় শ্রেনী পর্যন্ত পাঠরত কন্যাদের বার্ষিক 300 টাকার অনুদান।
2) চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কন্যাদের বার্ষিক 500 টাকা।
3) পঞ্চম শ্রেনীতে পাঠরত কন্যাদের বার্ষিক 600 টাকা।
4) ষষ্ঠ এবং সপ্তম শ্রেণীতে পাঠরত কন্যাদের বার্ষিক 700 টাকা করে স্কলারশিপ দেওয়া হয়।
5) অষ্টম শ্রেণীতে পাঠরত কন্যাদের বার্ষিক 800 টাকা করে স্কলারশিপ দেওয়া হয়।
6) নবম ও দশম শ্রেনীতে পাঠরত কন্যাদের বার্ষিক 1000 টাকা করে স্কলারশিপ দেওয়া হয়।
(Balika Samriddhi Yojana) প্রকল্পে আবেদন করার পদ্ধতি:
1) আবেদনকারী যে এলাকায় বসবাস করেন সেখানকার যে কোনো অঙ্গনওয়াড়ী কর্মী বা যে কোনো স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে এই প্রকল্পের আবেদন পত্র সংগ্রহ করতে হবে।
2) তারপর সেটিকে যথাযথ স্থানে সঠিক তথ্য দিয়ে নির্ভুলভাবে পূরণ করতে হবে।
3) তারপর তার সাথে সকল প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস এর জেরক্স যুক্ত করে যে স্থান থেকে আবেদন পত্র সংগ্ৰহ করবেন সেই স্থানে গিয়েই জমা দিতে হবে। তাহলেই আবেদন হয়ে যাবে।
(Balika Samriddhi Yojana) পেতে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস (এক কপি করে ফটোকপি):
1) আধার কার্ড ও রেশন কার্ড।
2) জন্মের প্রমান পত্র অর্থাৎ বার্থ সার্টিফিকেট।
3) বাবা মায়ের পরিচয় পত্রের প্রমান পত্র হিসেবে আধার কার্ড বা ভোটার কার্ড।
4) পঞ্চায়েত প্রধানের দেওয়া স্থায়ী বাসিন্দার সার্টিফিকেট।
5) বার্ষিক আয়ের প্রমান পত্র হিসেবে ইনকাম সার্টিফিকেট।
6)ব্যাঙ্কের পাস বুকের প্রথম পাতা।
7) রঙিন পাসপোর্ট সাইজের ফটো।
(Balika Samriddhi Yojana) এই প্রকল্পের সুবিধাগুলি:
1) বালিকা সমৃদ্ধি যোজনা-য় (Balika Samriddhi Yojana 2023) প্রদত্ত অর্থ কন্যা সন্তানের নামে একটি সুদ বহনকারী অ্যাকাউন্টে রাখা হবে।
2) অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য রাজ্য সরকার/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল প্রশাসন একটি ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিস বেছে নেবে।
3) পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড বা ন্যাশনাল সেভিংস সার্টিফিকেট প্রোগ্রামগুলিই প্রযোজ্য কারণ তারা অ্যাকাউন্টটিকে সম্ভাব্য সর্বোচ্চ সুদের হার অর্জন করতে দেয়।
4) শিশু কন্যার বয়স আঠারো বছর হওয়ার আগে কেউ টাকা তুলতে পারবে না।
5) মেয়েটির বয়স আঠারো হয়ে গেলে এবং অবিবাহিত হলে, সে গ্রাম পঞ্চায়েত/পৌরসভা থেকে একটি শংসাপত্র দেখিয়ে টাকা তুলতে পারবে।
6) যদি মেয়েটি আঠারো বছর বয়সের আগে বিয়ে করে, তবে সে শুধুমাত্র ₹500 জন্ম-পরবর্তী অনুদানের পরিমাণ এবং তার উপর সুদ পেতে পারে। অন্যান্য যোগ্য মহিলারা অবশিষ্ট তহবিল পাবেন
7) যদি মেয়ে শিশুটি আঠারো বছর হওয়ার আগেই মারা যায়, তবে তার অ্যাকাউন্টে থাকা টাকা প্রকল্পের অধীনে অন্যান্য যোগ্য সুবিধাভোগীদের কাছে যাবে।
বালিকা সমৃদ্ধি যোজনা (BSY) ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক উদ্যোগ যা বিশেষভাবে কন্যা সন্তানদের উন্নতির জন্য গৃহীত হয়েছে। এই যোজনার মূল উদ্দেশ্য হল কন্যা সন্তানের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের উন্নতি করা এবং তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা মজবুত করা।
যোজনার মূল বৈশিষ্ট্যসমূহ:
- আর্থিক সহায়তা:
- কন্যা সন্তানের জন্মের পর থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
- প্রথম কন্যা সন্তানের জন্মের পরেই ₹৫০০ প্রদান করা হয়।
- ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।
- শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা:
- এই যোজনার অধীনে কন্যা সন্তানদের স্কুলে ভর্তি করানো ও তাদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
- শিক্ষার মাধ্যমে কন্যা সন্তানদের স্বাবলম্বী করে তোলা এই যোজনার অন্যতম লক্ষ্য।
- স্বাস্থ্য ও পুষ্টি:
- কন্যা সন্তানদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টির দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয়।
- নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের শারীরিক উন্নতি নিশ্চিত করা হয়।
- বিবাহ সহায়তা:
- কন্যা সন্তানদের বিবাহের সময় আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়, যাতে তাদের বিবাহের ক্ষেত্রে কোন আর্থিক সমস্যা না হয়।
এই যোজনার সুফলসমূহ:
- শিক্ষার প্রসার: কন্যা সন্তানদের পড়াশোনার প্রতি উৎসাহ বাড়িয়ে তোলা।
- স্বাস্থ্য সচেতনতা: কন্যা সন্তানদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টির প্রতি সচেতন করা।
- আর্থিক নিরাপত্তা: কন্যা সন্তানদের জন্য ভবিষ্যতে আর্থিক সুরক্ষা প্রদান করা।
- সামাজিক অবস্থার উন্নতি: কন্যা সন্তানদের সামাজিক অবস্থার উন্নতি করা ও লিঙ্গ সমতার প্রচার।
পশ্চিমবঙ্গে বালিকা সমৃদ্ধি যোজনা:
পশ্চিমবঙ্গে বালিকা সমৃদ্ধি যোজনা কার্যকরী হয়েছে কন্যা সন্তানদের জন্য বিশেষ সুবিধা প্রদান করার জন্য। এই যোজনার অধীনে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার কন্যা সন্তানের জন্য অতিরিক্ত আর্থিক সহায়তা ও সুবিধা প্রদান করে থাকে। স্কুলে ভর্তি, স্বাস্থ্য চেক-আপ এবং বিবাহের সময় আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
যোজনার সুবিধাভোগীরা:
বালিকা সমৃদ্ধি যোজনার সুবিধাভোগীরা হল সেই সমস্ত কন্যা সন্তানরা যাদের পরিবারগুলি আর্থিক ভাবে দুর্বল। এই যোজনার মাধ্যমে কন্যা সন্তানের জন্ম থেকে শুরু করে তাদের উচ্চ শিক্ষার পর্যায় পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
বালিকা সমৃদ্ধি যোজনা অনলাইনে আবেদন করুন:
বালিকা সমৃদ্ধি যোজনার জন্য অনলাইনে আবেদন করার প্রক্রিয়া অত্যন্ত সহজ। নিচের ধাপগুলি অনুসরণ করুন:
- সরকারি ওয়েবসাইটে যান এবং বালিকা সমৃদ্ধি যোজনার আবেদন ফর্ম ডাউনলোড করুন।
- প্রয়োজনীয় তথ্য পূরণ করুন এবং প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সংযুক্ত করুন।
- ফর্মটি সাবমিট করুন এবং একটি রসিদ সংগ্রহ করুন।
FAQ:
2) বালিকা সমৃদ্ধি যোজনার মূল উদ্দেশ্য কি?
বালিকা সমৃদ্ধি যোজনার প্রাথমিক উদ্দেশ্য হল সমাজে শিশুমৃত্যুর হার এবং বাল্যবিবাহের ঘটনা দূর করা। এই স্কিমের লক্ষ্য হল মেয়ে শিশুর অনুপাতকে উন্নীত করা এবং রাজ্যে মেয়েদের শিক্ষার প্রচার করা। এই স্কিমটি মেয়েটিকে আয়-উৎপাদনমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করতে সহায়তা করে। এই প্রকল্পটি গ্রামীণ/শহুরে উভয় ক্ষেত্রেই বাস্তবায়িত হয়।
এমন আরও আপডেট পেতে আমাদের সাথে থাকুন।
Written by Joyeeta Mukherjee.
Post Disclaimers
'whatsupbengal.in' একটি বাংলা অনলাইন ব্লগ নিউজ পোর্টাল। এই নিবন্ধে এবং আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে প্রদত্ত তথ্যগুলি বিশ্বাসযোগ্য, যাচাই করা এবং অন্যান্য বড় মিডিয়া হাউস থেকে নেওয়া হয়েছে তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা সমস্ত ব্যবস্থা নিয়েছি। এই ওয়েবসাইটে দেওয়া বিষয়বস্তু শুধুমাত্র তথ্য ও শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে।
যোগাযোগ - wspbengal@gmail.com
নম্বর - 6297256750 (হোয়াটসঅ্যাপ)
আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন