নিজস্ব প্রতিবেদনঃ আনা হয়েছে আয়কর ফাইলে (Income Tax Rules) নতুন বেশ কিছু বদল। আগে থেকে জেনে না রাখলে পরে সমস্যা বাড়বে। তাই আগে থেকে জেনে নিই নতুন নিয়ম গুলি।
কোন চাকরীর বেতন হোক বা হোক কোন ছোট, মাঝারি বা বড় ব্যবসা – প্রত্যেকেরই থাকে আলাদা আলাদা আয়ের উৎস। আর সেক্ষেত্রে আয়কর দপ্তরের নিয়মে আয়কর ফাইল করে থাকেন অনেকেই। সেক্ষেত্রে এবারে আনা হয়েছে বিরাট বদল। আগে থেকে না জেনে রাখলে পড়তে পারেন বেশ বড় সমস্যায়। তাই এই বদল সম্পর্কে আগে থেকে জেনে সতর্ক হয়ে যান।
এপ্রিল থেকে শুরু করে মার্চ মাস পর্যন্ত আয়ের হিসেবে নিকেশ দাখিল করতে হয় সরকারের কাছে। মার্চ মাসের পর থেকে এই সুযোগ চলে আসে। সেখানে আয়ের সমস্ত তথ্য দেওয়া হয়ে থাকে। এরপরেও ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত লেট ফাইনের সাথেই এই ইনকাম ট্যাক্স ফাইল করা যায়। তবে সঠিক সময়ের মধ্যে ফাইল করলে বাড়তি কোন ফাইন দেবার দরকার পড়ে না।
Income Tax Rules from this Year 2024
ইনকাম ট্যাক্স ফাইলের সঠিক সময়ঃ-
গত আর্থিক বছর অর্থাৎ ২০২২-২০২৩ এর আয়কর ফাইল করার শেষ তারিখ ছিল গত ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩ তারিখ পর্যন্ত। এবারে নতুন আর্থিক বছর অর্থাৎ ২০২৩-২০২৪ এর আয়কর ফাইল করার কাজ শুরু হবে এই বছরই। ইতিমধ্যেই ফর্ম -১ এবং ফর্ম -৪ এর অপশন চালু হয়েছে। বাকি ফর্ম -২ এবং ফর্ম -৩ যাদের প্রয়োজন হবে, তাঁদের অপশন খুব শীঘ্রই খুলে যাবে।
কিন্তু একটি বিষয়ে জানিয়ে রাখি যে, এপ্রিল মাসে এই ইনকাম ট্যাক্স (Income Tax Rules) ফিলাপ না করাই ভালো। তাহলে কবে করলে ভালো। সবথেকে ভালো হয়, ১৫ জুন তারিখের পর এই কাজ করা ভালো। কারণ, অনেক ক্ষেত্রে টিডিএস কাটা হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে অনেকেই ৩১ মে তারিখ পর্যন্ত এই কাজ করে থাকে। এর ১৫ দিন পরই তার এফেক্ট রিফ্লেক্ট হয়। তাই সব হিসেব পেয়ে তবেই জুনের মাঝামাঝি এই আয়কর ফাইল রিটার্ন করা ভালো। তবে যাদের টিডিএস কাটার কোন ব্যাপার নেই, তাঁরা আগে থেকেই এই কাজ করে নিতে পারেন।
আয়কর রিটার্নে নতুন বদলঃ-
এই ফর্মের ক্ষেত্রে এই বছর থেকে আনা হয়েছে বেশ কিছু বদল। সেগুলি সম্পর্কে জেনে নেয়া খুব দরকার। আপনি যদি কোন চাকরী করে থাকেন তাহলে করতে হয় আইটিআর -১ ফর্ম ফিলাপ। আর ব্যবসায়ীদের জন্য রয়েছে আইটিআর -৪ ফর্ম ফিলাপ। শেয়ার মার্কেট ইনকাম হলে সেক্ষেত্রে ২, ৩ ফাইল করতে হয়। মিউচুয়াল ফান্ড, স্টক মার্কেটে কোন সেল না করে থাকলে ২, ৩ ফিলাপ করার দরকার পড়ে না।
ওল্ড নাকি নিউ রেজিমঃ-
কেন্দ্রীয় অর্থ দপ্তর গত বছরের বাজেটের মাধ্যমে ই-ফাইলিং পোর্টালে আয়কর রিটার্নে একটি বড়সড় পরিবর্তন আনে যা কার্যকরী হতে চলছে এই অর্থবর্ষ (2023-24) থেকেই এবং সেটা হল এখন থেকে ই-ফাইলিং পোর্টালে ‘বাই ডিফল্ট’ ট্যাক্স রেজিম থাকবে নিউ ট্যাক্স রেজিম (u/s 115BAC)। ওল্ড রেজিমে বেশ কিছু ছাড় পাওয়া যায়। তাই অনেকে ওল্ড রেজিমে থাকতে পছন্দ করেন। কেউ যদি ওল্ড ট্যাক্স রেজিমে রিটার্ন ফাইল করতে চান এই বছর, তাহলে তাকে আলাদা করে সেটা নির্বাচন (অপ্ট আউট) করতে হবে। এটি করে নিতে হবে তার রিটার্ন ফাইল করার শুরুতেই।
গত বছর পর্যন্ত ই-ফাইলিং পোর্টালে ‘বাই ডিফল্ট’ রেজিম ছিল ওল্ড ট্যাক্স রেজিম। এবার থেকে এটি উল্টো হতে চলেছে। তাই যে সমস্ত বেতন/পেনশনভোগী করদাতা ওল্ড ট্যাক্স রেজিমে এবার রিটার্ন ফাইল করতে চান তাদেরকে মনে রাখতে হবে যে তাদের মূল রিটার্নটি অতি অবশ্যই রিটার্ন ফাইলের ডিউ ডেটের মধ্যেই (যা সাধারণত হয় 31 শে জুলাই তারিখে) দাখিল ও ই-ভেরিফাই করতে হবে।
ই-ভেরিফিকেশনের শেষ তারিখ
নির্দিষ্ট তারিখের পর যারা পেনাল্টি সহযোগে নতুন করে রিটার্ন ফাইল করবেন [অর্থাৎ, 139(4) ধারায় বিলেটেড রিটার্ন], তাদের বাধ্যতামূলকভাবে নিউ ট্যাক্স রেজিমেই তখন রিটার্ন ফাইল (Income Tax Rules) করতে হবে। তাঁরা তখন ওল্ড ট্যাক্স রেজিম নির্বাচনের সুবিধাটি হারাবেন।
তাই এবার যারা ওল্ড ট্যাক্স রেজিমেই থাকতে চান,তাদেরকে এই তারিখের বিষয়টি (ডিউ ডেট অর্থাৎ , ৩১/০৭/২০২৪, যদি না তারিখ বর্ধিত হয়) মনে রেখে উক্ত সময়ের মধ্যেই রিটার্ন ফাইলের কাজটি ই-ভেরিফিকেশনসহ করতে হবে।
এছাড়া যারা চাকরীর সাথে সাথে ব্যবসা করে থাকেন, তাঁদের জন্য আইটিআর -৪ ফর্ম ফিলাপ করতে হবে। সেক্ষেত্রে যদি কেউ একবার ভুল করে ওল্ড রেজিম সেলেক্ট না করে নিউ ট্যাক্স রেজিম সেলেক্ট করেন, তাহলে পরবর্তীতে তিনি আর কখনোই ওল্ড ট্যাক্স রেজিমে ফিরে আসতে পারবেন না।
৯৫ শতাংশ লেনদেন যে সকল ব্যবসায়ী অনলাইন মোডে করে থাকেন তাঁদের ক্ষেত্রে আনা হয়েছে বিশেষ সুবিধা। এক্ষেত্রে আগে (৪৪ এডি) ২ কোটি টাকার টার্ন ওভার ছিল। কিন্তু এই লিমিট এবারে ৩ কোটি টাকা করে দেয়া হয়েছে। এই সুবিধা বিশেষ ঐ ব্যক্তিরাই পাবেন। এটি একটি নতুন সুবিধা, যা মিলবে এবার থেকে। ক্যাশ লেনদেন কম করার জন্যই এই নতুন নিয়ম চালু হয়েছে।
নতুন ডিডাকশন নিয়ম সেকশন ৮০সিসিএইচ
সেকশন ৮০সিসিএইচ হিসেবে একটি নতুন সেকশন যুক্ত করা হয়েছে চ্যাপ্টার -৬ এর অধীনে। কারণ অগ্নীবীর বা অন্যান্য চাকরীর ক্ষেত্রে ডিডাকশনের অপশন রয়েছে। এটি ওল্ড ট্যাক্স রেজিমে পাওয়া যাবে। স্যালারী থেকে ৩০ শতাংশ টাকা কেটে একটি নতুন ফান্ড তৈরি করা হয়েছে। এর নাম অগ্নীবীর করপাস ফান্ড। এর মধ্যেই এই টাকা জমা থাকে। এটি ইনভেস্টমেন্ট হিসেবেই জমা হবে। এর জন্য কোন কর দিতে হবে না।
নতুন ফর্ম ডাউনলোড করে দেখে নিন পরিবর্তন গুলি…
ব্যাঙ্কের বিবরণে নতুন নিয়মঃ-
ব্যাঙ্কের নাম, একাউন্ট নাম্বার আর আই এফ এস সি নম্বর দিয়ে নিজের ব্যাঙ্ক একাউন্ট যুক্ত করতে হত এই ফাইল করার সময়ে। সেক্ষেত্রেও দেখা যাবে আরও একটি নতুন বদল। সেক্ষেত্রে অন্তত একটি ব্যাঙ্ক একাউন্ট যুক্ত করতেই হত। কারণ অনেকের টাকা রিফান্ড আসতে পারে। বেশি টিডিএস কাটা হলে তা ফেরৎ আসতো।
এক্ষেত্রে নতুন অপশন যুক্ত করা হয়েছে। সেটি হচ্ছে একাউন্টের ধরণ। সেক্ষেত্রে নতুন তথ্য জানাতে হবে আয়কর দপ্তরকে। আপনার যে একাউন্ট যুক্ত করেছেন, সেটি কি স্যালারি একাউন্ট, নাকি সেভিংস একাউন্ট, নাকি কারেন্ট একাউন্ট এইসব তথ্য। এটা আগে দিতে হত না। এবার থেকে দিতে হবে।
এই ধরণের আরও আপডেট পেতে আমাদের সাথে থাকুন। এছাড়া এই প্রতিবেদন সংক্রান্ত মতামত থাকলে আমাদের জানাতে পারেন কমেন্টে। সঠিক সময়ে সঠিক আপডেট পেতে আমাদের সাথে যুক্ত থাকার অনুরোধ জানিয়ে শেষ করছি আজকের এই প্রতিবেদন। ধন্যবাদ।
Written by Joyeeta Mukherjee.
আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ | জয়েন করুন |
আমাদের টেলিগ্রাম গ্রুপ | জয়েন করুন |
আমাদের ফেসবুক পেজ | ফলো করুন |
google নিউজে ফলো করুন | ফলো করুন |
Post Disclaimers
'whatsupbengal.in' একটি বাংলা অনলাইন ব্লগ নিউজ পোর্টাল। এই নিবন্ধে এবং আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে প্রদত্ত তথ্যগুলি বিশ্বাসযোগ্য, যাচাই করা এবং অন্যান্য বড় মিডিয়া হাউস থেকে নেওয়া হয়েছে তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা সমস্ত ব্যবস্থা নিয়েছি। এই ওয়েবসাইটে দেওয়া বিষয়বস্তু শুধুমাত্র তথ্য ও শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে।
যোগাযোগ - wspbengal@gmail.com
নম্বর - 6297256750 (হোয়াটসঅ্যাপ)
আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন