ব্যবসার নতুন আইডিয়া দেখে নিজেই বিচার করুন, যে আপনার এলাকায় কোন ব্যবসা সবথেকে বেশি কাজের হবে। লাভের পরিমাণ বাড়বে আগের থেকে। অল্প পুঁজি খাটিয়ে দ্রুত ব্যবসার লাভ ঘরে তুলতে দেখে নিন বেশ কিছু স্বল্প পুঁজির ব্যবসার আইডিয়া, যা ঘরে বসেই করা সম্ভব। বাড়ির মহিলা থেকে শুরু করে যুবক-যুবতী, সকলেই লাভ ওঠাতে পারবেন এই ব্যবসার। তাই আর দেরি না করে দেখে নেয়া যাক, নতুন কিছু ব্যবসার আইডিয়া।
এমন অনেক মানুষ আছেন যারা চাকরির পাশাপাশি অত্যধিক মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিতে ছোটখাটো কোন ব্যবসায় নিজেকে নিযুক্ত করতে চান, আবার অনেকে চাকরি না পেয়ে স্বাধীনভাবে ব্যবসা করে নিজের আর্থিক সমৃদ্ধি বৃদ্ধি করতে চান। তবে ব্যবসা শুরু করবেন বললেই শুরু করে ফেলা যায় না। এর জন্য পুঁজির পাশাপাশি সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ব্যবসার আইডিয়া।
২০২৪ সালে দাঁড়িয়ে আমরা যখন ক্রমাগত আধুনিকতার দিকে অগ্রসর হচ্ছে তখন ব্যবসার পদ্ধতিও বহুভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে এবং ব্যবসা ক্ষেত্রেও ডিজিটালাইজেশন প্রবেশ করছে। এই কারণেই ২০২৪ সালে কোন ব্যবসা গুলি আপনার জন্য সব থেকে লাভজনক হতে পারে দেখে নিন এক নজরে।
১) ওয়েব ডিজাইন- ওয়েব ডিজাইন বর্তমানে অধিকাংশ IT কোম্পানির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ওয়েব ডিজাইন বর্তমান দিনে উপার্জনের একটি গুরুত্বপূর্ণ আইডিয়া হয়ে উঠতে পারে। এ বিষয়ে যদি আপনার নিজস্ব দক্ষতা থেকে থাকে তবে আপনি ওয়েব ডিজাইনিং এর মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানির হয়ে কাজ করতে পারেন। শুধু তাই নয় এ ক্ষেত্রে নিজস্ব ওয়েবসাইট লঞ্চ করেও কাজ করা যায়।
২) ব্লগিং- কোন ব্যক্তি যদি ব্লগিং সম্পর্কিত বিষয়ে উৎসাহী হন এবং জ্ঞানশীল, সেই সঙ্গে লেখার ক্ষেত্রে তার দক্ষতা থাকে এবং লেখার মাধ্যমে আনন্দ পান তবে তাদের জন্য ব্লগিং অর্থ উপার্জনের একটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। Affiliate Programs দিয়ে কাজ করা, ad space বিক্রি করা, Ebook প্রকাশ করা, আর্টিকেল লেখা ইত্যাদি বিষয় গুলির মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা যেতে পারে।
৩) অনলাইন বাজার- অনলাইনের মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে কোনো পণ্য ক্রয় বিক্রয় করা সম্ভব এই ব্যবসার মাধ্যমে। বর্তমান যুগে আধুনিক মানুষ অনলাইনে সঙ্গে আগের থেকে আরো অনেক বেশি পরিচিত হওয়ার কারণে এই ব্যবসা বর্তমানে অধিক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এটি এমন একটি ডিজিটাল মাধ্যম যার দ্বারা আপনি আপনার বিক্রয়জাত পন্য কোন কাস্টমারের কাছে পৌঁছে দিতে পারবেন।
আরও দেখুন, মহিলাদের জন্য ৫ ব্যবসা! শুরু করুন আজই
একটি সুবিধা জনক ওয়েবসাইট তৈরি করে তার মাধ্যমে আপনার পণ্য গুলিকে তালিকাভুক্ত করে এই ব্যবসাটি আপনি শুরু করে দিতে পারেন। এই ব্যবসাটিকে গ্রাহকদের কাছে আকর্ষণীয় গড়ে তুলতে গ্রাহকদের জন্য সুবিধাজনক অনলাইন পেমেন্ট পদ্ধতি তৈরি করতে হবে এবং মার্কেটিং ও প্রমোশনের মাধ্যমে আপনার প্ল্যাটফর্মটি প্রমোট করতে হবে। আপনার এই কাজের প্রচার যত বৃদ্ধি পাবে ঠিক তত আপনার ব্যবসা উন্নতি শিখরে পৌঁছাবে।
৪) খুচরা ব্যবসা- নিজের তৈরি পণ্যগুলিকে আপনি যদি সরাসরি গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দিতে চান তবে সেক্ষেত্রে Retail Business আপনার জন্য অত্যন্ত লাভজনক হয়ে উঠতে পারে। যেকোন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে আপনি অনায়াসে এই কাজ শুরু করে দিতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার ব্যবসার কথা যত চারিদিকে ছড়িয়ে পড়বে ততই আপনার লাভের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। সেই সঙ্গে মাথায় রাখবেন নিজের বিক্রয়জাত পণ্যের মান যেন বজায় থাকে।
৫) গ্রাফিক ডিজাইন- বর্তমান সময়ে গ্রাফিক ডিজাইনের বিষয়টি অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। গ্রাফিক ডিজাইনে কিছু দক্ষতা থাকলে এই ক্ষেত্রে উপার্জন শুরু করা খুবই সহজ হতে পারে। আধুনিক বিভিন্ন প্রোগ্রাম এবং গাইড ব্যবহার করে, Adobe Illustrator, Stencil বা Visme এর সাহায্যে এই ক্ষেত্রে আপনি নিজেকে অগ্রসর করতে পারেন। এমন কিছু ব্যক্তি বা কম্পানি আছে যাদের গ্রাফিক এর মাধ্যমে নিজস্ব কিছু প্রকল্প বা চিত্র তৈরি করতে হয়। তাদের প্রকল্পের জন্যও চিত্র তৈরির কাজ করা যেতে পারে। এর মাধ্যমে তাদের কাছ থেকে আপনি ভালো উপার্জন করতে পারবেন। এছাড়া logster দিয়ে লোগো এবং অন্যান্য গ্রাফিক ডিজাইন তৈরি করতে এবং তাদেরকে আপনার গ্রাহকদের বিক্রি করতে পারেন। এক্ষেত্রেও আপনার উপার্জন ভালোই হবে।
৬) বাঙালি ফুড কেটারিং সার্ভিস- বাঙালি সাধের ভালো খাবার আপনি যদি কাস্টমারদের কাছে ন্যায্য মূল্যে গুণমান বজায় রেখে পৌঁছে দিতে পারেন তবে আপনার জন্য তা অত্যন্ত লাভজনক ব্যবসা হয়ে উঠবে। এর জন্য উপযুক্ত ক্যাটারিং টিম তৈরি করতে পারেন। সেই সঙ্গে মোবাইল অ্যাপ বা ওয়েবসাইট ব্যবহার করে আপনার পরিষেবা সকলের কাছে পৌঁছে দিতে পারেন।
৮) ডিজিটাল মার্কেটিং- ডিজিটাল ট্রেডিং এর জগত এখন আগের থেকে অনেক বেশি ডিজিটাল নির্ভর হয়ে গেছে বলেই সারা বছর আপনি এই ব্যবসার মাধ্যমে উপার্জন করতে পারবেন। প্রথাগত মার্কেটিং এর বিপরীতে ডিজিটাল মার্কেটিং বিশ্বব্যাপী নিজের প্রভাব বিস্তার করেছে এবং সারা বিশ্বের বিভিন্ন কোম্পানি গুলির সঙ্গে যুক্ত হয়ে তাদের কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করছে।
ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে আপনি যদি কিছুটা দক্ষ হন তবে আরো কয়েকজন দক্ষ মানুষকে নিয়ে একটি দল তৈরি করে এই কাজের মাধ্যমে সারা বিশ্বের বিভিন্ন কোম্পানির হয়ে কাজ করতে পারেন। ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে এই ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ করা সম্ভব। এক্ষেত্রে উপার্জনে বেশ লাভজনক হয়। এক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে নিজের ডিজিটাল মার্কেটিং কে আরো প্রসারিত করতে আকর্ষণীয় কন্টেন্ট সহ ওয়েবসাইট প্রয়োজন। এই ওয়েবসাইটগুলি থেকে বিভিন্ন ধরনের টিপসও আপনি পেয়ে যাবেন।
৯) কফি শপ- কফি সারা বছরের জন্যই একটি অতি জনপ্রিয় পানীয়। অনেকেই কফি খেতে অত্যন্ত পছন্দ করেন। তাই আপনিও যদি আপনার ব্যবসার উপাদান হিসেবে ভিন্ন ভিন্ন ধরণের কফি রাখতে পারেন তবে তা আপনার বিক্রয় বাড়াতে সাহায্য করবে। কফির সঙ্গে যদি কিছু জল খাবারেরও ব্যবস্থা করতে পারেন তবে আপনার লাভ আরও বৃদ্ধি পাবে।
১০) মিষ্টির দোকান- মিষ্টি হলো এমন একটি খাবার যা অতিথি আপ্যায়ন থেকে শুরু করে যে কোন শুভ অনুষ্ঠান এমনকি নিজের পছন্দের জন্য ও মানুষ কিনে থাকেন। আপনি যদি একটি মোটামুটি সস্তা এবং ভালো লাভজনক ব্যবসায় আগ্রহী হন তবে এই ব্যবসাটি শুরু করে দিতেই পারেন। আপনার বিক্রয় করা মিষ্টির গুণমান যদি ভালো হয় তবে বড় বড় অর্ডারও আপনি পেতে পারেন। যা আপনার ব্যবসায়িক উন্নতির ঘটাতে সাহায্য করবে।
১১) কন্টেন্ট ক্রিয়েট এজেন্সি- সাধারণ মানুষের জন্য আকর্ষণীয় এবং নতুনত্ব কিছু কনটেন্ট তৈরি করে আপনি নিজের উপার্জন শুরু করতে পারেন। বর্তমানে এমন অনেক কোম্পানি আছে যারা প্রভাবশালী কনটেন্ট তৈরির জন্য এজেন্সির সাহায্য নিতে চলেছে। তাই আপনি যদি একটি কন্টেন্ট ক্রিয়েট এজেন্সি খুলতে পারেন এবং আপনার যদি নিজস্ব লেখার দক্ষতা থাকে তবে এটি আপনার জন্য অত্যন্ত উপযোগী উপার্জনের মাধ্যম হয়ে উঠতে পারে।
তবে এক্ষেত্রে কনটেন্ট ক্রিয়েশন এজেন্সি হিসেবে আপনার নিজের ব্যবসার জন্য উপযুক্ত এবং মূল্যবান কনটেন্ট তৈরি করার দক্ষতা অবশ্যই থাকতে হবে। সেই সঙ্গে মাথায় রাখতে হবে আপনার কনটেন্ট যেন এমন হয় যার সহজেই মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং মনোগ্রাহী হয়ে ওঠে।
১২) গার্মেন্টস দোকান- কাপড়ের প্রয়োজন গরমের জন্য বা শীতকাল সব সময়ের জন্যই থাকে। এই কারণে আপনি যদি একটি কাপড়ের দোকান খুলতে চান তবে এটি থেকে আপনার জন্য একটি লাভজনক বিকবা হতে পারে। তাই আপনি আগ্রহী থাকলে এই ব্যবসা শুরু করতেই পারেন।
১৩) ইন্টেরিয়র ডিজাইনার- ইন্টেরিয়র ডিজাইন হিসেবে আপনি যদি ব্যবসা শুরু করতে চান তবে এটিও বর্তমান দিনে আপনার জন্য অত্যন্ত লাভজনক হতে পারে। বর্তমানে ইন্টিরিয়র ডিজাইনিং ট্রেন্ড খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইন্টিরিয়র ডেকর স্পেশালিস্ট হওয়ার জন্য নিজস্ব দক্ষতার অবশ্যই প্রয়োজন হয়। এতে কিছু আবাসিক প্রকল্প, কার্যস্থল প্রকল্প, বাণিজ্যিক প্রকল্প ইত্যাদি থাকতে পারে। নিজের দক্ষতায় নিজের একটি টিম বানিয়ে এই কাজ গুলি আপনি করে ফেলতে পারেন। তবে নিজের এই ব্যবসা কে প্রসারিত করার জন্য একটি বিজনেস কার্ড দরকার হবে। যেটি বাজারে আপনার ট্রেডমার্ক পৌঁছে দিতে সাহায্য করবে।
১৪) মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট- মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট এর মাধ্যমে বিভিন্ন সেক্টর যেমন বিনোদন, আইন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাণিজ্যিক, সাহিত্য, সংবাদমাধ্যম,পর্যটন, খেলাধুলা, সামাজিক যোগাযোগ ইত্যাদি বিষয়ে ব্যবসা করতে পারেন। এতে সাধারণ মানুষের জীবন আরো সহজ এবং সুবিধাজনক হয়ে ওঠে। মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট ব্যবসার মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যবসার প্রসার ঘটারের জন্য একজন ব্যবসায়িক উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন এবং এর মাধ্যমে অনেক বেশি উপার্জন করতে পারবেন। একটি উচ্চ মানের অ্যাপ তৈরি করে এই কাজ গুলি পরিচালনা করা সম্ভব।
Post Disclaimers
'whatsupbengal.in' একটি বাংলা অনলাইন ব্লগ নিউজ পোর্টাল। এই নিবন্ধে এবং আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে প্রদত্ত তথ্যগুলি বিশ্বাসযোগ্য, যাচাই করা এবং অন্যান্য বড় মিডিয়া হাউস থেকে নেওয়া হয়েছে তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা সমস্ত ব্যবস্থা নিয়েছি। এই ওয়েবসাইটে দেওয়া বিষয়বস্তু শুধুমাত্র তথ্য ও শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে।
যোগাযোগ - wspbengal@gmail.com
নম্বর - 6297256750 (হোয়াটসঅ্যাপ)
আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন