নিজস্ব প্রতিবেদনঃ ডিজিটাল মাধ্যমের ব্যবহার সমস্ত ব্যবস্থাপনাকে করেছে আগের থেকে আরও বেশি সহজ, সরল এবং সুরক্ষিত। তবে জালিয়াতি কর্মকান্ড পিছু ছাড়ে না। সেই সকল বিষয়ে কড়া ব্যবস্থা নিতে এবারে উদ্যোগ নিল সরকার। প্রায় সারা দেশের মানুষের কাছে ইতিমধ্যেই পৌঁছে গেছে প্রধানমন্ত্রী জনধন যোজনার সুবিধা। তবে AEPS সিস্টেমের মাধ্যমে আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে টাকা তোলায় ব্যবহৃত আঙ্গুলের ছাপের অপব্যবহার রুখতে এবারে নেওয়া হল এই পদক্ষেপ। চলুন জেনে নেয়া যাক।
NPCI order to stop AEPS for Money Withdrawal
অর্থ লেনদেন সংক্রান্ত জালিয়াতি বর্তমানে এতটাই তীব্র হারে বৃদ্ধি পেয়েছে যার ফলে প্রতারিত হতে হচ্ছে বহু মানুষকে। বিভিন্ন সময় দেখা যাচ্ছে সাধারণ মানুষকে ভুল বুঝিয়ে বিভিন্ন ভুয়ো লিঙ্কে ক্লিক করিয়ে বা অ্যাপ ডাউনলোড এর মাধ্যমে তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল প্রতারকরা।
কিন্তু সম্প্রতি এমন খবর নজরে এসেছে যার মাধ্যমে কোনো ভুয়ো লিঙ্ক ক্লিক না করে বা অ্যাপ ডাউনলোড না করেও নিমেষের মধ্যে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খালি হয়ে যাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই এ নিয়ে সাধারণ মধ্যবিত্ত মানুষের মনে চিন্তার ভাঁজ দেখা গিয়েছিল। এই প্রতারণার জালে জর্জরিত হয়ে সর্বহারা হয়ে পড়ছিলেন বহু মানুষ। পরে জানা গিয়েছিল আধার কার্ডের তথ্য জালিয়াতি করে সেই আধার কার্ডের সঙ্গে লিঙ্ক করে রাখা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে অনায়াসে টাকা তুলে নিচ্ছে গ্রাহকরা।
অবশেষে এই ব্যাপারটি রুখতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। আধার কার্ডের বায়োমেট্রিক সহ অন্যান্য তথ্য যাতে আর না হ্যাক হয়ে যায় সেই কারণে ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া (NPCI), এইপিএস (AEPS) ব্যবস্থা বন্ধের নির্দেশ দিল। এইপিএস ব্যবস্থায় আসলে আধারের বায়োমেট্রিক (Aadhaar Biometric) তথ্য দিয়ে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলা সম্ভব হয়। আধার কার্ডে থাকা বায়োমেট্রিক ব্যবহার করে এআইপিএসের মাধ্যমে একদফায় ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত তোলা যায়। কোনো ব্যক্তির দেওয়া আঙুলের ছাপকে ব্যবহার করেই প্রতারকরা এই ধরনের প্রতারণা চক্র চালু করেছিল।
দুর্গাপুজোর আগেই মূলত এই আধার কার্ড তথ্য জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খালি করে দেওয়ার ঘটনা গুলি তীব্র ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল। গ্রাম গঞ্জের সাধারণ মানুষরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখেছিলেন এক নিমেষে তারা তাদের অ্যাকাউন্টে থাকা সম্বল হারিয়ে ফেলেছেন। সংবাদ মাধ্যমগুলিতে এই বিষয় সংক্রান্ত নানা ধরনের প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
প্রশাসনের তরফ থেকেও সতর্ক করা হয় সাধারণ মানুষদের। তবে বিভিন্ন সতর্কতা অবলম্বন করেও এই প্রতারণা খুব একটা বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। এই কারণেই ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া এবার এইপিএস ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিল। ইতিমধ্যেই এইপিএস ব্যবস্থা বন্ধ করার কাজ শুরু করে দিয়েছে বিভিন্ন ব্যাংক। এতদিন সব গ্রাহকদেরই এইপিএস ব্যবস্থা চালু থাকার কারণে আঙুলের ছাপ ব্যবহার করে প্রতারকরা টাকা তুলে নিত।
আরও পড়ুন, ব্যাঙ্ক গুলিতে শনিবারের ছুটি সংক্রান্ত বিরাট পদক্ষেপ নিল কেন্দ্র! কবে থেকে শুরু, দেখুন
তবে আশা করা যাচ্ছে এটি বন্ধের পর আর টাকা তুলে নিতে পারবে না প্রতারকরা। তবে কোনো গ্রাহক চাইলে ব্যাংকের শাখায় গিয়ে তার এইপিএস ব্যবস্থা চালু রাখার আবেদন জানাতে পারেন। এই বিষয়ে ব্যাঙ্ক বাঁচাও, দেশ বাঁচাও মঞ্চের প্রতিনিধি সৌম্য দত্ত বলেন, “এটা দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ। আগ্নেয়গিরির উপরে গ্রাহকরা বসেছিলেন। প্রায়সময়ই এই ধরনের প্রতারণার শিকার হচ্ছিলেন সাধারণ মানুষ। আমরা দেখছিলাম আঙুলের ছাপ দিয়ে প্রতারণার ভুরি ভুরি অভিযোগ আসছে।
এরপরই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার গভর্নরের কাছে চিঠি লিখি। আধার কার্ডের সঙ্গে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বাধ্যতামূলক লিঙ্কিং বন্ধ করার আবেদন জানাই। গত ২৬ অক্টোবর ন্যাশনাল পেমেন্টস কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়ার তরফে বিভিন্ন ব্যাঙ্ককে চিঠি পাঠিয়ে এইপিএস ব্যবস্থা বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” তবে একটা বিষয়, এরপরেও যদি কোন ব্যক্তি এই ব্যবস্থা চালু রাখতে চান তাহলে একটা উপায় আছে।
এই আঙ্গুলের ছাপ দিয়ে AEPS এর মাধ্যমে টাকা তোলার ব্যবস্থা চালু রাখতে হলে গ্রাহককে ব্যাঙ্কে একটি সম্মতি পত্র জমা করতে হবে। এটি করলেই তিনি আঙ্গুলের ছাপ ব্যবহার করে নিজের একাউন্ট থেকে টাকা তুলতে পারবেন। এছাড়া যদি থাকে এটিএম কার্ড, তাহলে সেটি ব্যবহার করেও আপনি টাকা তুলতে পারবেন। এমন আরও আপডেট পেতে আমাদের সাথে থাকুন। ধন্যবাদ।
Written by Joy Halder.
Post Disclaimers
'whatsupbengal.in' একটি বাংলা অনলাইন ব্লগ নিউজ পোর্টাল। এই নিবন্ধে এবং আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে প্রদত্ত তথ্যগুলি বিশ্বাসযোগ্য, যাচাই করা এবং অন্যান্য বড় মিডিয়া হাউস থেকে নেওয়া হয়েছে তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা সমস্ত ব্যবস্থা নিয়েছি। এই ওয়েবসাইটে দেওয়া বিষয়বস্তু শুধুমাত্র তথ্য ও শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে।
যোগাযোগ - wspbengal@gmail.com
নম্বর - 6297256750 (হোয়াটসঅ্যাপ)
আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন