নিজস্ব প্রতিবেদনঃ পঞ্চম বেতন কমিশনের আজই মহামান্য সুপ্রিমকোর্টে ডিএ মামলার ক্ষেত্রে জানা গেল নতুন আপডেট। 3 নভেম্বরের এই ডিএ মামলার (DA Case Update) শুনানি হল। মামলাটি উঠেছিল 8 নম্বর কোর্টেই। তবে এবারেও এই মামলার সিরিয়াল নাম্বার শেষের দিকেই ছিল। মামলার নম্বর ছিল 60. আজকের শুনানিতে কি জানা গেল, তা যেন নেয়া যাক।
আজকের মামলার ক্ষেত্রে অফিস রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছিল গত 2 নভেম্বর, 2023 তারিখ বৃহস্পতিবারেই। সেক্ষেত্রে মহার্ঘ ভাতার সাথে অন্যান্য ভাতার কথাও যুক্ত করা হয়েছে এই সুপ্রিম কোর্টের মামলায়। এই বক্তব্যে বলা হয়েছিল যে, “The matter pertains to Dearness Allowance and other allowances for the employees under West Bengal Government.”
আগে শুধুমাত্র “Dearness Allowance” কথাটি বলা হলেও এবারে এর সাথে “other allowances” কথাটি যুক্ত হয়েছে। পূর্বের জাজমেন্ট কপিতেও এই কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। রাজ্য সরকারের বকেয়া ডিএ (DA Case Update) সংক্রান্ত SLP মামলা মহামান্য সুপ্রিম কোর্টে রেজিস্টার করা হয়েছিল 3 নভেম্বর তারিখেই। তবে সালটা ছিল 2022. আর ঠিক তার 12 মাস পর ফের এই মামলার শুনানির তারিখ একই অর্থাৎ 3 নভেম্বর তবে সালটা এবারে 2023. মাঝে পার হয়েছে 365 দিন।
‘ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা পাওয়া কার্যত 100 শতাংশ নিশ্চিত। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের দায়ের করা এসএলপি (SLP) খারিজ হবেই। ডিএ মিলবে রাজ্যের সরকারি কর্মীদের’। এমনটাই মন্তব্য করেছেন, সরকারি কর্মীদের পক্ষের মামলাকারী সংগঠন কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের সভাপতি শ্যামল মিত্র। প্রায় একই ধরণের বক্তব্য শোনা গেছে আর এক মামলাকারী সংগঠন, সরকারি কর্মচারী পরিষদের। সংগঠনের সভাপতি দেবাশিস শীল মহাশয় বলেন যে, ‘এই মামলায় রাজ্য সরকারের আবেদন খারিজ হবে বলে আশাবাদী। কারণ, রাজ্য সরকারের কাছে কোনও যুক্তি নেই’।
3 নভেম্বর, 2023 -এর বকেয়া ডিএ মামলার আপডেট
3 নভেম্বর তারিখে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টে কনফেডারেশন অফ স্টেট গভমেন্ট এমপ্লয়িজ এবং অন্যান্যদের সাথে স্টেট অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল এবং অন্যান্যদের মামলা ছিল। এটি বকেয়া ডিএ মামলা নামেও বেশ পরিচিতি লাভ করেছে। এই মামলায় মাননীয় আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য মহাশয় এবারে কোলকাতা থেকে উপস্থিত ছিলেন অনলাইনে। কারণ গত 18 অক্টোবর তারিখেই তাঁর বুকে পেস মেকার বসানো হয়েছে। সাধারণ সম্পাদক মলয় কুমার মুখোপাধ্যায় মহাশয় তাঁর ভিডিও বার্তাতে এই কথা আগেই জানিয়েছিলেন।
WB DA Case Update – যা জানা গেল
ডিএ মামলার রাজ্যের পক্ষের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি আদালতে জানিয়েছেন যে, অন্য একটি দিন ধার্য করা হোক। সেক্ষেত্রে রাজ্যের সরকারি কর্মীদের পক্ষের আইনজীবী শ্রদ্ধেয় বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য মহাশয় এবং ফেরদৌস শামিম বারবার শুনানি পিছিয়ে যাবার বিষয়টি তুলে ধরেন। একটি নির্দিষ্ট দিন শুনানির জন্য ধার্য করার জন্য বলেন তাঁরা।
বিজেপি আগেই বাঘা আইনজীবীদের কথা জানিয়েছিল। সেক্ষেত্রে তাঁদের আইনজীবী পিএস পাটোয়ালি জানান যে, এটি সরকারি রাজ্যের সরকারি কর্মীদের মামলা। তাঁদের ডিএ মিলছে না। হাইকোর্ট এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। শুনানি বারবার পিছিয়ে গেলে সমস্যা বাড়ার কথা উল্লেখ করেন তিনি। সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর মহামান্য বিচারপতি হৃষীকেশ রায় এবং বিচারপতি সঞ্জয় করোল এর ডিভিশন বেঞ্চ জানায় যে, আগামী বছর এই মামলার শুনানি হবে। সেক্ষেত্রে ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের কথা উল্লেখ করেছেন তাঁরা।
3 নম্ভেম্বর, 2023 তারিখ শুক্রবারে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টে রাজ্যের বকেয়া ডিএ মামলার শুনানি সম্পর্কে জানা যাচ্ছে যে, এই মামলা এবারে ফের দশম বারের জন্য ফের পিছিয়ে গেল। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে ফের এই ডিএ মামলার শুনানির তারিখ দেওয়া হয়েছে। সেই সময়ে ডিএ মামলা বিষয়ে শুনবে মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট।
ডিএ প্রাপকদের মধ্যে নতুন প্রশ্নের উদয় ও তাঁর গতি
বিভিন্ন স্তরের সরকারি কর্মী এবং শিক্ষক শিক্ষিকাদের একটা বড় অংশের মনে একটা বিরাট প্রশ্ন মাথাচাড়া দিচ্ছে। সেটি হচ্ছে, DA মামলার রায় কি শুধুমাত্র রাজ্যের কর্মীদের জন্যই! শ্যামল কুমার মিত্র মহাশয় হলেন কনফেডারেশন অফ স্টেট গভমেন্ট এমপ্লয়িজ এর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি। তিনি স্পষ্টভাবে এই বিষয়ে ভিডিও বার্তাতে কিছু কথা জানিয়েছেন।
সেক্ষেত্রে, স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনাল (SAT) এ যখন এই বকেয়া ডিএ বিষয়ক মামলা করা হয়েছিল তখন শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের কথা উল্লেখ করার আলাদা করে কোন সুযোগ ছিল না। কারণ, সরকারি কর্মীরা ব্যক্তিগতভাবে অথবা সংগঠনগত ভাবে যুক্ত হয়ে SAT -এ মামলা করতে পারেন। তবে এই ক্ষেত্রে কোন শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীদের মামলা করার অধিকার নেই। তাহলে একটা প্রশ্ন এসেই যায়, যে তাঁরা তাঁদের দাবী কোথায় তুলে ধরবেন!
এক্ষেত্রে তাঁদের মামলা করতে হবে মহামান্য হাইকোর্টে। শ্যামল কুমার মিত্র মহাশয় আরও জানিয়েছেন যে, তাঁরা মামলার ক্ষেত্রে এমন ভাবেই উল্লেখ করেছেন যাতে, এই মামলার রায়ে রাজ্যের সরকারি কর্মী থেকে শুরু করে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী প্রত্যেকেই লাভবান হন। বক্তব্য অনুসারে, রোপা 2009 অনুসারে যাদের বেতন এবং ভাতা সংশোধন হয়েছে তাঁদের ডিএ সংক্রান্ত বিষয়ে AICPI মেনেই সমস্ত বকেয়া ডিএ মেটাতে হবে।
বকেয়া ডিএ মামলায় কনফেডারেশন অফ স্টেট গভঃ এমপ্লয়িজ
সেক্ষেত্রে তিনি এই বকেয়া ডিএ এর হিসেব জানিয়ে দিয়েছেন। বকেয়া ছিল 50 শতাংশ। সেক্ষেত্রে 16 শতাংশ এর সংস্থান করেছিল তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার। আর বাকি 34 শতাংশ দাবী করেই এই মামলা করা হয়েছিল। এই হিসেবে স্বাভাবিক ভাবেই শিক্ষক শিক্ষিকারা এই রায়ের আওতায় এসে যাচ্ছেন। তবে অনেকেরই এই বিষয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এর পেছনে যুক্তিও রয়েছে।
রাজ্য সরকার একটি হলফনামা জমা দিয়েছিল মহামান্য সুপ্রিম কোর্টে। সেক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের তরফ থেকে মোট রাজ্য সরকারি কর্মীদের একটি পরিসংখ্যান পেশ করা হয়েছিল। সেক্ষেত্রে রাজ্যের 3 লক্ষ 20 হাজার সংখ্যাটি উল্লেখ করা হয়েছিল। স্বাভাবিকভাবেই এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, এক্ষেত্রে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের ধরা হয় নি। সেক্ষেত্রে কর্মরত সরকারি কর্মীদের সংখ্যা 2 লক্ষ 41 হাজার এবং পেনশনভোগীদের সংখ্যা জুড়ে দিলেও সংখ্যাটা 3 লক্ষ 20 হাজারের থেকে অনেক বেশি হয়।
শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের বকেয়া ডিএ বিষয়
অর্থাৎ তাঁর মতে এই সংখ্যা সঠিক নয়। সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে যদি অন্যান্যদের জন্য এই রায় কার্যকর না করা হয়, তাহলেও মামলার আবেদনের বয়ান অনুসারে রোপা 2009 এর কথা উল্লেখ করা রয়েছে। সেক্ষেত্রে ফের মামলা করার সুযোগ থাকছে। তাঁরাই উদ্যোগ নিয়ে বা অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের সংগঠনকে এই বিষয়ে পরামর্শ দেবেন সংগঠনের তরফ থেকে।
আরও পড়ুন, ডিএ বাড়লো তবে এরিয়ার মিলবে PF একাউন্টে! পেনশনভোগীদের মিলবে নগদ
মহামান্য সুপ্রিম কোর্টে এই বকেয়া ডিএ মামলায় (DA Case Update) অ্যাড পার্টির কথা নিয়েও তিনি বেশ কিছু বিষয়ে উল্লেখ করেছেন। তাঁর মতে যেহেতু এই মামলা SAT এর। আর রাজ্য সরকার হচ্ছে এই মামলার পিটিশনার, তাই এই বিষয়ে তাঁদের কোন বক্তব্য নেই। সেক্ষেত্রে সরকারি কর্মীদের সাথে শিক্ষকদের নিয়োগ পদ্ধতি, বেতন পদ্ধতি ও চাকরীবিধি ভিন্ন ভিন্ন। এবারে অ্যাড পার্টি হবার মামলা মহামান্য সুপ্রিম কোর্টে গৃহীত হলে সেক্ষেত্রে প্রশ্ন আসতেই পারে যে, মহামান্য কোলকাতা হাইকোর্টেও মামলা কোর্টে হতে পারে। আর সেই মামলা কতটা দীর্ঘায়িত হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।
DA -এর ক্ষেত্রে অন্যান্য রাজ্যের সাথে পশ্চিমবঙ্গের অবস্থান
কেন্দ্রের সরকার কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের AICPI অনুসারে মহার্ঘ ভাতা প্রদান করে থাকে। তবে এর সাথে সাথে ভারতের সমস্ত রাজ্যে তাঁদের রাজ্য সরকারি কর্মীদের আলাদা আলদা ভাবে ডিএ দিয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে সারা দেশে সর্বোচ্চ ডিএ প্রদানকারী রাজ্য হিসেবে রয়েছে অরুণাচল প্রদেশ, বিহার, গুজরাট, ছত্রিশগড়, হরিয়ানা, গোয়া, কেরল, পাঞ্জাব, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরাখন্ড, সিকিম, রাজস্থান, আসাম হিমাচল প্রদেশ। এই সকল রাজ্য 42 শতাংশ হারে দিচ্ছে মহার্ঘ ভাতা। এর মধ্যে আবার অনেক রাজ্যে ইতিমধ্যেই 46% হারে DA দেবার ঘোষণা হয়েও গিয়েছে।
অপর দিকে মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, নাগাল্যান্ড রাজ্যে দেওয়া হচ্ছে 38% হারে। মিজোরামে 36%, মেঘালয়ে 32%, মনিপুরে 28 শতাংশ, তেলেঙ্গানাতে 22.75% এবং ত্রিপুরাতে 20 শতাংশ হারে মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হয়ে থাকে। এই হিসেব গত জুলাই, 2023 পর্যন্ত। এর পরেও অনেক রাজ্যে ডিএ বৃদ্ধি হয়েছে। তবে সেই স্থানে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের ডিএ প্রাপ্তি 6 শতাংশ হারেই।
তবে সর্বপরি তিনি কনফেডারেশন অফ স্টেট গভমেন্ট এমপ্লয়িজ এর তরফ থেকে সকল শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের আশ্বস্ত করেছেন যে, তাঁরা সকলের কথা ভেবেই সিদ্ধান্ত নেবেন। তাঁরা এই বিষয়ে সবদিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেবেন। এই বিষয়ে আপনার কী মতামত, তা আমাদের জানাতে পারেন কমেন্টে। ধন্যবাদ।
Written by Joyeeta Mukherjee.
Post Disclaimers
'whatsupbengal.in' একটি বাংলা অনলাইন ব্লগ নিউজ পোর্টাল। এই নিবন্ধে এবং আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে প্রদত্ত তথ্যগুলি বিশ্বাসযোগ্য, যাচাই করা এবং অন্যান্য বড় মিডিয়া হাউস থেকে নেওয়া হয়েছে তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা সমস্ত ব্যবস্থা নিয়েছি। এই ওয়েবসাইটে দেওয়া বিষয়বস্তু শুধুমাত্র তথ্য ও শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে।
যোগাযোগ - wspbengal@gmail.com
নম্বর - 6297256750 (হোয়াটসঅ্যাপ)
আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন
Nicely discussed the burning topic ‘DA CASE’. Hope that you would be doing so next time & onwards. I am retired and will look forward your valuable discussion. It is expected that it would fruitfully be ended soon.
Good night.
Thanks for your reply.