নিজস্ব প্রতিবেদনঃ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জি এর অনেক আগে থেকে ঘোষিত বক্তব্য অনুসারে আজ সোমবার, সারা দেশ জুড়ে চালু হয়ে গেল সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট তথা CAA. কীভাবে আর কবে থেকে আবেদন, কাদের মিলবে নাগরিকত্ব, আবেদন করতে পারবেন কারা, দেখে রাখুন।
CAA – Citizenship Amendment Act
এই আইন ভারতীয় নাগরিকদের জন্য কোন প্রয়োজনীয়তা রাখে না। এটি শুধুমাত্র সেই সকল মানুষদের জন্য যারা তথা হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন, পারশিক হিসেবে প্রতিবেশী দেশ থেকে ভারতে এসেছেন, কোন আইন এই অধিকার কেড়ে নিতে পারে না। মুসলিমসহ ভারতীয় নাগরিকদের ওপর সিএএর কোনওরকম প্রভাব পড়বে না এমনটাই জানা গিয়েছে।
সামনে আসছে লোকসভা নির্বাচন। এই লোকসভা নির্বাচনের আগেই দেশজুড়ে সিএএ সম্পর্কিত বিশেষ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হলো। এর আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পরিচালিত ভারতীয় কেন্দ্রীয় সরকার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে দেশবাসীকে বিশেষ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় বারের জন্য মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০১৯ সালে উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার থেকে এই প্রসঙ্গে নানা বক্তব্য প্রকাশ করেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ২০১৯ সালেই সংসদের দুই কক্ষে পাশ হয়েছিল এই আইন। পরে রাষ্ট্রপতিও অনুমোদন দিয়েছিলেন সিএএ বিলে।
তারপর অবশেষে দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে দেশ জুড়ে চালু হলো সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ২০২০ সাল থেকেই এই আইন দেশ জুড়ে কার্যকর করার সময়সীমা বৃদ্ধির আবেদন জানিয়ে আসছিল। ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর সিএএ পাশ করার ফলে আইন অনুযায়ী বলা হয়েছিল বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ইত্যাদি মুসলিম ধর্মাবলম্বী দেশ থেকে যদি সেই দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা ধর্মীয় উৎপীড়নের কারণে এ দেশে আশ্রয় চান তবে ভারত তাদের জন্য সেই আশ্রয়ের ব্যবস্থা করবে।
এর আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর বলেছিলেন ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করার দু-এক দিন আগে হলেও এই সিএএ আইন ঘোষণা হবে। যদিও রাজ্যের তৃণমূল সরকারের দিক থেকে এ বিষয়ে বারবার কটাক্ষ করা হয়েছিল। তৃণমূল নেতৃত্বের তরফ থেকে বারবার প্রশ্ন তোলা হয়েছিল যে নাগরিকরা এ দেশে ভোট দেন, নিজস্ব ভোটার কার্ড, আধার কার্ড ইত্যাদি সমস্ত কিছুই আছে তাদের জন্য আলাদা করে নাগরিকত্বের ব্যবস্থা চালু করার কি প্রয়োজন।
তবে কেন্দ্রীয় সরকার এর তরফ থেকে দাবী করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের একটি বিশাল অংশের মানুষ বিশেষ করে মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষদের জন্য এই নাগরিকত্ব আইন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারতীয় সংবিধান অনুসারে দেশের নাগরিকদের সার্বভৌমত্বের অধিকার রয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে ভারতের যে কোনো সম্প্রদায়ের নাগরিকের জীবনেই সিএএ কোন কুপ্রভাব বিস্তার করবে না। ২০১৪ সালের ৩১ শে ডিসেম্বরের পর পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় কারণে এদেশে আসা হিন্দু, জৈন, বৌদ্ধ, পারসি এবং খ্রিস্টানদের জন্যেই তৈরি হয় এই Citizenship Amendment Act বা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন।
জানা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে চালু করা CAA আইনের মাধ্যমে পাসপোর্ট বা ভিসার মতো গুরুত্বপূর্ণ নথি না থাকলেও এই আইন অনুসারে ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন জানানো সম্ভব হবে। এই আইনের মাধ্যমে শরণার্থীরাও ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন জানানোর সুযোগ সুবিধা লাভ করবেন। জানা যাচ্ছে এদেশে বসবাসের সময়সীমা ১২ বছরের পরিবর্তে করা হচ্ছে ৬ বছর। ফলে ভারতীয় নাগরিকত্ব লাভ এর পদ্ধতিগুলি আরো অনেক সহজ হয়ে যাবে এই আইনের মাধ্যমে।
আবেদন করতে পারবেন তাঁরা, যাদের নেই কোন পাসপোর্ট বা ভিসা। আগে ১২ বছর থাকতে হত। এবারে তা কমিয়ে করা হয়েছে ৬ বছর। শুধুমাত্র হিন্দু, শিখ, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, জৈন এবং পার্সিদের জন্য ভারতীয় নাগরিক প্রদান করবে এই আইন।
CAA -এর নিয়ম, কাদের জন্য! দেখুন
সিএএ ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করা হয়েছে। অনেক আগেই কেন্দ্রের স্বরাস্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ এবং নরেন্দ্র মোদী একথা বলেছেন। দেশের হিন্দু, শিখ, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, জৈন এবং পার্সিদের জন্য ভারতীয় নাগরিক প্রদান করবে এই আইনে। যারা প্রতিবেশী মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হিসেবে পরিচিত দেশ যেমন পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৪ -এর আগে স্থানান্তরিত হয়ে ভারতে এসেছেন, তাদের মিলবে এই সুবিধা।
অবৈধভাবে বসবাস করছেন বিশেষ করে মুসলিমদের কি বিতাড়িত করা হবে কিনা এই আইনে! এর উত্তরেও বিজেপি সরকার জানিয়েছে, “একেবারেই নয়।” নাগরিকদের বিতরণের সঙ্গে সিএএ এর কোন সম্পর্ক নেই।১৯৪৬ এর বিদেশি আইন এবং ১৯২০ পাসপোর্ট আইন অনুযায়ী এই সংক্রান্ত বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকে। এটি নাগরিকত্ব দেবার আইন, কেড়ে নেবার নয়।
আরও জানতে দেখুন।
আরও দেখুন, ফের কমলো গ্যাসের দাম! ভোটের মুখেই সিদ্ধান্তে মোদী সরকার
আবেদন পদ্ধতি সম্পর্কে এখনো পর্যন্ত সঠিক কোন তথ্য জানা যায় নি। তবে অনলাইনের মাধ্যমেই করতে হবে আবেদন। বিস্তারিত পদ্ধতি জানতে চোখ রাখুন আমাদের ব্লগে। এই সম্পর্কে মতামত জানাতে পারেন কমেন্টে। ধন্যবাদ।
Written by Joyeeta Mukherjee.
Post Disclaimers
'whatsupbengal.in' একটি বাংলা অনলাইন ব্লগ নিউজ পোর্টাল। এই নিবন্ধে এবং আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে প্রদত্ত তথ্যগুলি বিশ্বাসযোগ্য, যাচাই করা এবং অন্যান্য বড় মিডিয়া হাউস থেকে নেওয়া হয়েছে তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা সমস্ত ব্যবস্থা নিয়েছি। এই ওয়েবসাইটে দেওয়া বিষয়বস্তু শুধুমাত্র তথ্য ও শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে।
যোগাযোগ - wspbengal@gmail.com
নম্বর - 6297256750 (হোয়াটসঅ্যাপ)
আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন