নিজস্ব প্রতিবেদনঃ রাজ্য সরকারি স্কুল গুলির ক্ষেত্রে শিক্ষক এবং শিক্ষা কর্মীদের কর্মস্থান বদলি (Mutual Transfer Utsashree) সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে টানাপোড়েন চলছিল দীর্ঘদিন ধরে। তবে এই বদলির বিষয়ে রাজ্যকে নিয়ম কিছুটা শিথিল করার প্রস্তাব দিল SSC বা স্কুল সার্ভিস কমিশন।
শিক্ষক এবং শিক্ষা কর্মীদের (WB Teachers) বদলি সংক্রান্ত জটিলতা দূর করতে সম্প্রতি রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতরকে একটি চিঠি দিয়ে মিউচুয়াল ট্রান্সফার চালু করার কথা জানাল এসএসসি। জানা গেছে বহু শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী নিজেদের কর্মস্থান বদলির বিষয়ে আবেদন জানালেও প্রায় দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে আটকে রয়েছে এই বদলির প্রক্রিয়া।
Mutual Transfer Utsashree – সংক্রান্ত নতুন আপডেট
তারা বার বার এ বিষয়ে সরকারের কাছে আবেদন জানালেও কোনো সুরাহা পাননি। তবে এবার রাজ্যকে চিঠি দেওয়ায় কিছুটা আশার আলো দেখতে চলেছেন বদলির জন্য অপেক্ষারত শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মীরা। স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার এই বদলির প্রসঙ্গে বলেন “নিয়োগের ক্ষেত্রে মিউচুয়াল ট্রান্সফার এর প্রভাব পড়ে না। ছাত্র ও শিক্ষকের অনুপাতেরও কোনো বদল ঘটে না, তাই মিউচুয়াল ট্রান্সফার চালুর ক্ষেত্রে কোন বাধা নেই। আমরা সরকারকে আমাদের তরফ থেকে মিউচুয়াল ট্রান্সফার (Mutual Transfer Utsashree) চালুর জন্য চিঠি দিয়েছি।”
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল আবার দীর্ঘদিন এই প্রক্রিয়া বন্ধ থাকা প্রসঙ্গে বলেন “মিউচুয়াল ট্রান্সফার এত দিন ধরে আটকে রাখার কোন যৌক্তিকতা ছিল না। এটি একটি আশার খবর যে, এসএসসি শিক্ষা দফতরকে চিঠি দিয়েছে পুনরায় মিউচুয়াল ট্রান্সফার চালু করার জন্য। শিক্ষা দফতরের উচিত দ্রুত এ বিষয়টি কার্যকর করা।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য শিক্ষক এবং শিক্ষা কর্মী দের জন্য এই রাজ্যে প্রথম অনলাইনের মাধ্যমে মিউচুয়াল ট্রান্সফার এর ব্যবস্থা করা হয় ২০২০ সালে। তবে সেই সময় মিউচুয়াল ট্রান্সফার গ্রহণ করতে হলে শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মীদের কমিশনারের দফতর থেকে অনুমতি পত্র গ্রহণ করতে হতো। এরপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের পর ‘উৎসশ্রী’ নামের একটি বিশেষ পোর্টাল চালু করেন।
এই পোর্টালে অনলাইনের মাধ্যমে সরাসরি মিউচুয়াল ও জেনারেল ট্রান্সফারের আবেদন করতে পারতেন রাজ্যের শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মীরা। আগে ট্রান্সফারের জন্য কমিশনারের দফতর থেকে অনুমতি লাগলেও এই পোর্টাল চালু হওয়ার পর ট্রান্সফারের সুপারিশের দায়িত্ব দেওয়া হয় স্কুল সার্ভিস কমিশনকে এবং ট্রান্সফারের অর্ডার ইস্যু করার দায়িত্ব দেওয়া হয় মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে।
তবে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে বর্তমানে আমাদের রাজ্যের টালমাটাল পরিস্থিতিতে বিভিন্ন আইনি জটিলতা শুরু হওয়ার পর ২০২২ সালে সেপ্টেম্বর মাসে সরকারের তরফ থেকে ঘোষণা করা হয় শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মীদের বদলির জন্য যে পোর্টাল চালু ছিল তা বন্ধ করা হচ্ছে। প্রথমে ছয় মাসের জন্য এই পোর্টাল বন্ধ করার কথা বলা হলেও দীর্ঘ দেড় বছর সময় অতিবাহিত হয়ে গেছে।
কিন্তু আজ পর্যন্ত এই পোর্টাল বন্ধ রয়েছে। ফলে বদলি সংক্রান্ত নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন আবেদনকারীরা। বিশেষ তথ্য অনুযায়ী জানা যাচ্ছে মিউচুয়াল ট্রান্সফারের প্রায় ৩৫০ আবেদন দেড় বছর ধরে পড়ে আছে যার অনুমোদন এখনও দেওয়া হয়নি। এ ছাড়াও জেনারেল ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে পোর্টাল বন্ধের আগে পর্যন্ত আবেদনের সংখ্যা ছিল প্রায় ২০০০।
বর্তমানে এই বদলির বিষয়টি যাতে সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করা যায় সেই বিষয়েই দ্রুত ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য বলেন “দু জন শিক্ষক যখন পারস্পারিক সমঝোতার ভিত্তিতে বদলির আবেদন করেন এই বিষয়ে কোনো বাধা থাকা উচিত নয়। এই বিষয়টি দ্রুত চালু হলে শিক্ষক শিক্ষিকাবৃন্দ উপকৃত হবেন।”
প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি যে, নিয়ম অনুসারে কোনও শিক্ষক বা শিক্ষিকা সাসপেন্ড থাকলে তাঁরা ট্রান্সফার এর জন্য আবেদন করতে পারবেন না। কোনরকম কেস থাকলে বা বিভাগীয় তদন্ত চালু থাকলেও তিনি বদলি পাবেন না। মেডিক্যাল গ্রাউন্ডে আবেদন করলে রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন অবশ্যই লাগবে। ৪০ শতাংশের বেশি প্রতিবন্ধকতা থাকলে রিনিউ করা প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট দিয়েই আবেদন করতে হবে তাঁদের।
Post Disclaimers
'whatsupbengal.in' একটি বাংলা অনলাইন ব্লগ নিউজ পোর্টাল। এই নিবন্ধে এবং আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে প্রদত্ত তথ্যগুলি বিশ্বাসযোগ্য, যাচাই করা এবং অন্যান্য বড় মিডিয়া হাউস থেকে নেওয়া হয়েছে তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা সমস্ত ব্যবস্থা নিয়েছি। এই ওয়েবসাইটে দেওয়া বিষয়বস্তু শুধুমাত্র তথ্য ও শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে।
যোগাযোগ - wspbengal@gmail.com
নম্বর - 6297256750 (হোয়াটসঅ্যাপ)
আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন