পশ্চিমবঙ্গের সরকারি স্কুল শিক্ষকদের পেনশন নিয়ে আজকের এই বিশেষ প্রতিবেদন। রাজ্যের পশ্চিমবঙ্গের সরকারি স্কুল শিক্ষকেরা নিজেদের কর্মজীবনে যে, সত্যিই বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত হয়ে আছেন, বিষয়টি তাদের নানা আন্দোলনের মাধ্যমে উঠে আসে বারে বারে। কারো কর্মক্ষেত্র অনেক দূরে অথচ ট্রানস্ফার পাচ্ছেন না আরো বিভিন্ন ধরনের পেশাগত সমস্যা! রাজ্যে বর্তমানে ডিএ আন্দোলন নিয়েও তোলপাড়। কেন্দ্রের মহার্ঘ ভাতা AICPI মেনে বছর বছর 2 বার বৃদ্ধি পেলেও রাজ্যের সরকারি কর্মীদের প্রাপ্তি মাত্র 6 শতাংশ। তবে এবারে সরকারি কর্মীদের পেনশন নেবার সময় লাগবে কোন কোন তথ্য, আগে থেকে জেনে রাখতে দেখুন আমাদের এই প্রতিবেদন।
পশ্চিমবঙ্গের সরকারি স্কুল শিক্ষকদের পেনশন
সঠিক নিয়ম জানা না থাকলে চালু হয়ে যাওয়া পশ্চিমবঙ্গের সরকারি স্কুল শিক্ষকদের পেনশন বন্ধ হয়ে গিয়ছে এমনও অনেক উদাহরণ সামনে এসেছে! আবার দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন। সেক্ষেত্রে কয়েক বছর হয়ে যাওয়ার পরও তার পরিবার এখনো পর্যন্ত কোনো আর্থিকভাবে সুবিধা পায়নি। অর্থাৎ পেনশন চালু হয় নি! পোষ্যরা এখনও চাকরি পাননি। এখনতো শর্তাবলী প্রযোজ্য। যারা রাজ্যের সরকারি ক্ষেত্রে নানা পদে কর্মরত অবস্থায় রয়েছে, আগামী দিনে যাতে কোন রকমের অসুবিধার মধ্যে পড়তে না হয়, তার জন্য দেখুন আজকের এই প্রতিবেদন।
পশ্চিমবঙ্গের সরকারি স্কুল শিক্ষকদের পেনশন পেতে কি করবেন?
সমস্যা গুলোর সম্মুখীন যাতে হতে না হয়, তার জন্য ভবিষ্যতে রাজ্যের পশ্চিমবঙ্গের সরকারি স্কুল শিক্ষকদের এখন থেকেই সজাগ হতে হবে। প্রত্যেকেই প্রমাণ্য নথিগুলোর একটা ফাইল করে রাখুন। এর ফলে আর পরবর্তী সময়ে আপনাকে অযথা এখানে সেখানে ছোটাছুটি করতে হবে না। অনেকেই হয়তো সেটা করে রেখেছেন বা অনেকে করেননি, সেগুলো পরিবারের সদস্যদের দেখিয়ে রাখতে হবে। তাহলে তারাও এই বিষয়ে ওয়াকিবহাল থাকবেন। রাজ্যের স্কুল শিক্ষক শিক্ষিকাদের পেনশন আগামীতে অনলাইনে চালু হবার বিষয়েও শোনা যাচ্ছে। তবে এটি চালু হলে, শিক্ষকদের অনেক সুবিধাই হবে।
পশ্চিমবঙ্গের সরকারি স্কুল শিক্ষকদের পেনশন পেতে পরিবারের সতর্কতা
কারণ রাজ্যের স্কুল গুলিতে চাকরি করলেও অনেকই বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গুলি জানেননা। এটা ঠিক, তেমনি পরিবারের সদস্যগণ বিভিন্ন দপ্তরের চক্কর কেটে কেটে হতাশ হয়ে পড়বেন ভবিষ্যতে, যদি বিষয় গুলি জানা না থাকে। তাই বেসিক কিছু জিনিস জেনে রাখা অত্যন্ত জরুরী। তার থেকে সমস্ত নথিপত্র গুলো যদি একসঙ্গে ফাইলগত করা থাকে, তাহলে খুব সহজেই পরিবারের পেনশন পেতেও সুবিধা হবে। কারণ বিপদ বলে কয়ে আসে না। আগে থেকেই সতর্ক থাকা দরকার। তাই দেখে নেওয়া যাক কি কি প্রমাণ্য নথিপত্র ফাইলগত করে রাখা উচিৎ রাজ্যের সরকারি কর্মীদের পেনশন এর জন্য। পেনশনের সময় নিজ নিজ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জমা দিতে যা যা প্রয়োজন হয়, দেখে নেয়া যাক।
পশ্চিমবঙ্গের সরকারি স্কুল শিক্ষকদের পেনশন পেতে লাগে যে সকল নথি
পেনশন পেতে এগুলি রেডি রাখুন এখন থেকেই।
1. শিক্ষকদের পেনশন ফার্স্ট অ্যাপোয়েন্টমেন্ট লেটার।
2. চাকরিতে জয়েনিং করা লেটার অর্থাৎ জয়েনিং লেটার।
3. শিক্ষকদের পেনশন পেতে যদি কেউ প্রধান শিক্ষক পদে উন্নীত হয়েছেন কর্মরত অবস্থায় তাহলে, হেড টিচার অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার এবং জয়েনিং লেটার, সেইসঙ্গে প্রধান শিক্ষক পদে যদি অপশন দিয়ে থাকেন এবং ফিক্সেশন ফর্ম।
4. শিক্ষকদের পেনশন পেতে চাকরীরত অবস্থায় যেসব শিক্ষক/শিক্ষিকা যতবার বদলি হয়েছেন সেই বদলির অর্থাৎ ট্রানস্ফার লেটার এবং জয়েনিং লেটার।
5. বিভিন্ন ধরনের বেনিফিট পাওয়া যায়, যেমন 10/18/20 বছরের বেনিফিট এর নথিপত্র মানে অপশন ফর্ম বা ফিক্সেশন ফর্ম!
6. চাকরীরত অবস্থায় বিভিন্ন ধরণের ছুটি ভোগ করে থাকলে তার অর্থাৎ MEDICAL LEAVE, COMMUTED LEAVE, MATERNITY LEAVE, PATERNITY LEAVE, WITHOUT PAY LEAVE, বা অন্য যে সমস্ত ছুটি স্যাংশন হয়ে থাকে, সেগুলোর প্রামাণ্য নথিপত্র।
7. পশ্চিমবঙ্গের সরকারি স্কুল শিক্ষকদের পেনশন পেতে কর্মরত অবস্থায় অনেককেই শিক্ষাগত যোগ্যতা বাড়াতে হয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ক্ষেত্রে d.el.ed এবং উচ্চতর বিদ্যালয় গুলির ক্ষেত্রে বিএড এই সমস্ত যোগ্যতার ট্রেনিং পাস সার্টিফিকেট এবং তার পরবর্তী ফিক্সেশন এর নথিপত্র।
8. এমপ্লয়ি যতগুলো রোপা 2009, 2019 বা পূর্বে পেয়েছেন সেগুলোর অপশন এবং ফিক্সেশন এর প্রমাণ্য নথিপত্র যদি থেকে থাকে।
9. চাকরীরত অবস্থায় বিশেষ করে ফিমেল দের ক্ষেত্রে অনেক সময় সারনেম চেঞ্জ করতে হয়, তার কপি গুলো।
10. কোন শিক্ষকদের পেনশন পেতে যদি শিক্ষক শিক্ষিকা পূর্বের রোপা 1986 সালের আগে চাকরিতে যোগদান করে থাকেন, তাহলে সরকারি কর্মীদের পেনশন পেতে ডেথ কাম রিটায়ারিং বেনিফিট ফর্ম, অর্থাৎ আগে যারা কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ড ইসকিমে (CPF) ছিলেন পরবর্তীতে জেনারেল প্রভিডেন্ট ফান্ড স্কিম(GPF) এসেছেন, সেইসঙ্গে ট্রেজারীর চালান কপি থাকতে হবে, তা না হলে পেনশন পেতে সমস্যা দেখা দিতে পারে!
11. কোন শিক্ষক/শিক্ষিকা তার কর্মজীবনে যতগুলো স্কুলে সার্ভিস করেছেন সেই সমস্ত বিদ্যালয় গুলির রিকগনাইজ ডেট, আর যদি তারিখ নাও পাওয়া যায় অন্ততপক্ষে সালটা মনে রাখতে হবে তাদের!
12. এটা বিশেষ করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ত্রঁদের বাৎসরিক যে রিটার্ন (YEARLY RETURN) দেওয়া হয় সেটিতে উল্লেখ করা থাকে। অনেক সময় এই সমস্ত বিষয় গুলো সাধারন বিষয় বলে এড়িয়ে যান অনেকেই তবে এই সামান্য বিষয় না ভাবার জন্যই পরবর্তীতে অসুবিধায় পড়তে হতে পারে! মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও হয়তো সেরকমই কিছু থাকবে।
13. বর্তমানে আধুনিক যুগ, ইন্টারনেটের যুগ, তাই আগামী দিনে সরকারি কর্মীদের পেনশন পেতে ই-পেনশন সিস্টেম চালু হয়ে যাবে বা এখন সমস্ত সিস্টেমটাই অনলাইনে চালু হচ্ছে। সেক্ষেত্রে এম্প্লয়ির প্রতিবছরের যে বেতনের পরিবর্তন হয় অর্থাৎ ইনক্রিমেন্ট বা (10, 18, 20 বছর) যে বেনিফিট বিভিন্ন রোপা অনুযায়ী পরিবর্তনের স্কেল লেখা থাকে, বা যখন যখন ট্রেনিং পাস করেছেন সেগুলো প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে এসআইএস করেন, মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এর ক্ষেত্রে উক্ত ইনস্টিটিউশনের হেড অফ দা ইনস্টিটিউশন বা ডিআই অফিস করে। সেগুলো নিজেদের লিখে রাখতে হবে।
পশ্চিমবঙ্গের সরকারি স্কুল শিক্ষকদের পেনশন এর নিয়ম সব সময় পরিবর্তনশীল, তাই আগামী দিনে আরো কিছু যদি প্রমাণ্য নথিপত্র লাগে সেগুলো আমাদেরকে ভালো ভাবে রাখতে হবে। বিশেষ করে সরকারি কর্মীদের পরিচয় পত্রের নথিপত্রগুলোতে নিজেদের নাম এর স্পেলিং গুলো যেন ঠিকঠাক থাকে, যেমন ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, প্যান কার্ড ইত্যাদি যদি ভুল থাকে তাহলেও ভবিষ্যতে এই সমস্ত বিষয় গুলো পেনশন পেতে কাজে লাগে। তার কারণেও যেন পরিবারকে অসুবিধার সম্মুখীন হতে না হয়, সেদিকে এখন থেকেই নজর রাখা উচিৎ। তাই যারা আগামী দিনে অবসর গ্রহণ করবেন বা অনেকের প্রমাণ্য নথিপত্রের অভাবে এখনো পেনশন চালু হয়নি, তারা এই সমস্ত প্রমাণ্য নথিপত্র গুলো নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করবেন। GO NO. Memo No:347-SE(B)1M-39/2003 DT-16.09.2003 দেখে নিতে পারেন।
উপসংহার
আমাদের সাথে যুক্ত থেকে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ আপডেট পেয়ে যান খুব তাড়াতাড়ি! সরকারি চাকরী থেকে শুরু করে নতুন ব্যবসার দারুণ আইডিয়া, রাজ্য ও কেন্দ্রের নানা প্রকল্প, দিনের নানা আপডেট, ব্যাংক, পোস্ট অফিস, LIC এর নতুন প্ল্যান, টেলিকম জগতের নানা অফার হিসেবে জিও-এয়ারটেল-BSNL-VI এর দারুণ রিচার্জ, সরকারি কর্মীদের নানা আপডেট, স্কুল-কলেজ সংক্রান্ত নানা বিষয়, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি স্কলারশিপ, নতুন মোবাইল থেকে শুরু করে নানা ধরণের টেক নিউজ সম্পর্কে পান নতুন আপডেট। সকলে সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।
স্যালারি একাউন্ট কীভাবে পাল্টাবেন, স্কুল শিক্ষকেরা জেনে রাখুন।
Post Disclaimers
'whatsupbengal.in' একটি বাংলা অনলাইন ব্লগ নিউজ পোর্টাল। এই নিবন্ধে এবং আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে প্রদত্ত তথ্যগুলি বিশ্বাসযোগ্য, যাচাই করা এবং অন্যান্য বড় মিডিয়া হাউস থেকে নেওয়া হয়েছে তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা সমস্ত ব্যবস্থা নিয়েছি। এই ওয়েবসাইটে দেওয়া বিষয়বস্তু শুধুমাত্র তথ্য ও শিক্ষামূলক উদ্দেশ্যে।
যোগাযোগ - wspbengal@gmail.com
নম্বর - 6297256750 (হোয়াটসঅ্যাপ)
আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন